এমন অসংখ্য বিষয় আছে যা যেকোনো ভালো এবং কঠোর পরিশ্রমী লোকের কর্মজীবন ধ্বংস করতে পারে। অসতর্ক ভুলও অনেক সময় মারাত্মক কোনো পরিণতি বয়ে আনতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সচরাচর যে ৭টি বিষয় আপনার ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে পারে :
১. অফিস রাজনীতির নোংরা খেলা
কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে শক্তিশালী কাজের সম্পর্ক না গড়ে দ্বন্দ্ব উসকানি দেওয়া, দলবাজি, সহকর্মীদেরকে হেয় করা, গুজব ছড়ানো এবং অফিস রাজনীতির নোংরা তৎপরতায় লিপ্ত হওয়া। তবে গোপনে গোপনে যদি অফিস রাজনীতি আপনার ক্ষতি করে তাহলে এমন কোনো কৌশল অবলম্বন করুন যা আপনি সহকর্মীদের সামনেই খোলামেলাভাবে আলোচনা করতে পারবেন।
২. অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতি দিয়ে কম অবদান রাখা
কঠোর পরিশ্রমী হওয়ার কারণে আপনি হয়ত আকাশ থেকে চাঁদটি পেড়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দিতে পারেন। কিন্তু সমস্যাটি হলো অতিরিক্ত কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিলে অযথাই আপনার নিজের ওপর চাপ বাড়বে। ধরুন আপনি কোনো একটি কাজ অযৌক্তিকভাবে দ্রুততর গতিতে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিলেন। কিন্তু এরপর দেখা গেল নির্দিষ্ট সময়ের সামান্য পরে গিয়ে আপনি কাজটি সম্পন্ন করতে পেরেছেন। এরপরও আপনি হয়তো ভাবতে পারেন আপনি ভালোই করেছেন। কারণ খুব বেশি দেরি করেননি। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন, আপনি যেমন প্রতিশ্রুতি দেবেন লোকে তেমনটাই চাইবে। একটুও কম নয়। সুতরাং অবাস্তব প্রতিশ্রুতে দিলে আপনার ইমেজই শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৩. আত্মপ্রসাদ
আপনি সর্বশেষ কবে নতুন কোনো দক্ষতা অর্জন করেছেন, আপনার নেটওয়ার্কের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, বা আপনার রিজ্যুমিটি পালিশ করেছেন? যদি তা মনে না করতে পারেন তাহলে বুঝতে হবে আপনি আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন। আর জেনে রাখুন, আত্মপ্রসাদ সত্যিকার ক্যারিয়ার ধ্বংসকারী। আত্মতুষ্টি আসে তখন যখন আপনি স্রোতে গা ভাসিয়ে দেন এবং ভাবেন কিছুই হয়ত কখনো বদলাবে না। কিন্তু সত্য হচ্ছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুই বদলে যায়।
৪. পরিবর্তনে ভয়
আত্মতুষ্টির মন্দ যমজ হলো পরিবর্তনে ভয় পাওয়া। কোনো কিছু অপরিবর্তিত রাখতে এটি সক্রিয় ভুমিকা পালন করে। কর্মক্ষেত্রে আপনি এর উদাহরণ দেখতে পাবেন, যখন কোনো কাজের নতুন পদ্ধতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পেরে পুরনো পদ্ধতিটিই আঁকড়ে থাকতে চান কোনো কর্মী। কিন্তু এখন সবকিছুই অনেক দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯১% লোক বলেছেন, সবচেয়ে সফল কর্মী হলেন তারা যারা নিয়ত পরিবর্তনশীল কর্মস্থল ও কর্মপরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম। ব্যক্তিগত এবং পেশাগত উভয় দিক থেকেই পরিবর্তন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আপনি চান বা না চান পরিবর্তন ঘটতে থাকবেই। সুতরাং পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেক মানিয়ে নেওয়া শিখতে হবে।
৫. বাজে অহং থাকা
সাফল্য অর্জনের ফলে যদি আপনার মনে অহংকার তৈরি হয় তাহলে তা বিপদ ডেকে আনবে। একবার সাফল্য অর্জনের পর আপনি যদি ভাবতে থাকেন যে আপনার সাফল্য চিরস্থায়ী হবে তাহলে নিজের অজান্তেই এরপর আপনি নিশ্চিত ব্যর্থতার দিকে এগিয়ে যাবেন।
৬. নিম্ন আবেগগত বুদ্ধিমত্তা
আবেগগত বিস্ফোরণ, অন্যকে হেয় করা, সহকর্মীদেরকে কথা বলতে না দেওয়া, আত্মসচেতনতায় ঘাটতি প্রভৃতি আবেগগত বুদ্ধিমত্তায় ঘাটতির লক্ষণ। এসব আচরণ বদলাতে না পারলে আপনার ক্যারিয়ার ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে।
৭. বসকে তোষামুদি করা
তোষামুদি করার মাধ্যমে কখনোই সম্মানের ভিত্তিতে নির্মিত একটি সত্যিকার কাজের সম্পর্ক গড়ে তোলা যায় না। ফলে যে সহকর্মীরা মেধা ও পরিশ্রমের ভিত্তিতে সামনে এগিয়ে যেতে চান তারা আপনার ওপর ক্ষুব্ধ হবেন। বসের সঙ্গে আপনি অবশ্যই ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। তবে তা যেন সহকর্মীদেরকে অগ্রাহ্য করার মাধ্যমে না হয়। মনে রাখবেন ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে চাইলে বসের সঙ্গে কোনো কর্মীর সম্পর্ক নির্ভেজাল হতে হবে। আর মেধার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সম্পর্কের কোনো বিকল্প নেই।
Collected from kalerkantho