Facebook Youtube Twitter LinkedIn
Career Advice

মিটিং যদি করতেই হয়; মানতে পারেন নিচের নিয়ম গুলি।

image

প্রতিদিন আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রচুর মিটিং সংঘটিত হয়ে থাকে। যদিও বহিঃস্থ উন্নত বিশ্বে টেবিল চেয়ারে আয়োজন করে, সশরীরে মিটিং করার রেওয়াজ দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। কারন, যতই বলা হোক, যেভাবেই চেষ্টা করুন না কেন, একেকটি মিটিং এ প্রচুর সময় ও এনার্জি খরচ হয়ে যায়। তাই উন্নত দেশগুলোতে চেষ্টা চলছে, ফিজিক্যাল এ্যাপিয়ারেন্স যত বেশি কমিয়ে আনা যায়। তার বদলে যায়গা করে নিচ্ছে, স্কাইপ মিটিং, ভিডিও কনফারেন্সিং, মেইলিং, গ্রূপ চ্যাটসহ নানা রকমের কমিউনিটি বেজড অনলাইন ডিসকাশন প্লাটফরম ও টেকনোলজি। যার সাহায্যে দূর দূর স্থান হতে এসে, টেবিল চেয়ারে বসে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ন ও উচ্চস্থানীয় পদের মানুষের মিটিং করার চাপ কমিয়ে আনা যাচ্ছে। আমাদের দেশে নানা কারনেই এই সংস্কৃতি কমে আসেনি। তবুও আমাদের যদি মিটিং করতেই হয়, তবে কিছু বিষয়ে নজর দিলে হয়তো বিষয়টা আরেকটু কস্ট ইফেকটিভ হতে পারে। যেমন:-

১. প্রথমেই ভাবুন মিটিং টি কোন প্রকৃতির। ক) অতি জরুরী ও অতি গুরুত্বপূর্ন খ) জরুরী ও গুরুত্বপূর্ন গ) গুরুত্বপূর্ন কিন্তু জরুরী নয় ঘ) জরুরী কিন্তু গুরুত্বপূর্ন নয়-এমন অনেক বিষয় নিয়েই মিটিং হয়ে থাকে। তাই মিটিং ডাকার আগে ভাবুন, মিটিং করার আর কোনো বিকল্প আছে কিনা এবং মিটিং টি ওই ৪ ধরনের কোনটিতে পড়ে।

২.মিটিঙের সময় নির্ধারন খুব জরুরী। সাধারনত মিটিঙে যারা হাজির থাকবেন, তাদের সবার যৌথ মতামত নিয়ে মিটিং এরেঞ্জ করা উচিত। নেহায়েত বাধ্য না হলে হঠাৎ করে মিটিং ডেকে বসাটা সত্যিকারে কাজ দেয় কম।

৩.সাধারনত দিনের শুরুতে মিটিংগুলো বেশি কার্যকর। এর কারন অনেক। সবচেয়ে বড় কারন হল, আপনি যে বিষয়টি নিয়ে মিটিঙে আলাপ করলেন, সিদ্ধান্ত নিলেন, সেটি বাস্তবায়নের জন্য মিটিং শেষ হবার পর হতে একটি পুরো দিন পেয়ে গেলেন। তদুপরি, সকাল হতে কাজ করে দুপুর নাগাদ পিকে ওঠা কর্মগতিতে ছেদ পড়ে যদি তখন আপনি মিটিঙে বসেন। আর যদি অফিস আওয়ার শেষে তা করতে চান, তবে ভাবুন, সারাদিন কাজ করে ক্লান্ত ও বিপর্যস্থ শারিরীক ও মানসিক অবস্থায় আপনি মিটিঙে ঠিক কতটা ইনপুট দিতে পারবেন এবং সেটা যদি প্রায়ই হয়? অবশ্য মিটিঙে স্মার্ট ইনপুট দেয়াটা যদি গুরুত্ব পায়, তবেই এভাবে ভাববেন।

৪.প্রতিটি মিটিঙে একজন চেয়ার ও একজন কনভেনার থাকা উচিত। যিনি কনভেনার, তিনি সমন্বয় সাধন, মিটিং ডাকা, ভেন্যু বুক করা, শিডিউল করা, রিফ্রেশমেন্ট ও লজিসটিকস আয়োজন করার ও মাইনুটস লিখবেন। মিটিঙের চেয়ারপারসন মিটিংটি নিয়ন্ত্রণ করবেন। সিদ্ধান্ত দেবেন বা উপরস্থের মতামত নেবার ও সবাইকে জানাবার দায়িত্ব নেবেন। সভাপতি বিহীন মিটিং হযবরল, অর্থাৎ তার কাঙ্খিত কোনো লক্ষ্যই পূরন করতে পারবে না।

৫.মিটিঙের (অন্তত ১ দিন) আগেই আলোচ্য বিষয় ও সম্ভাব্য বিশ্লেষন (সম্ভব হলে) যারা আসবে সবাইকে জানিয়ে রাখা উচিত। তাতে সবাই নিজ নিজ মতামত তৈরীর ও হোমওয়ার্ক করার সময় পাবেন।

৬.মিটিঙে ঢোকার বাধ্যতামূলক কিছু আদব আছে, যেমন: ফোন বন্ধ বা সাইলেন্ট রাখা, মিটিঙে ফোন না ধরা বা ফোন না করা, মিটিং শুরুর সাথে সাথে রিফ্রেশমেন্ট না দিয়ে বরং অন্তত ১ ঘন্টা পরে দেয়া, কারো কথার মাঝে তাকে থামিয়ে না দেয়া, অনবরত কথা না বলা, সময় মনে রাখা ইত্যাদি ইত্যাদি।

৭.প্রতিটি মিটিঙের একটি নির্দিষ্ট শুরুর সময় ও শেষের সময় থাকতে হবে। সেই সময়ের মধ্যে সভা শেষ করার জন্য সভাপতি ও কনভেনারকে সজাগ থাকতে হবে। মূল্যবান কর্মঘন্টায় বা ব্যক্তিগত সময়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য মিটিঙে বসে কাটানো স্মার্ট প্রতিষ্ঠানের কাজ নয়।

৮.মিটিঙের আলোচ্য বিষয় এবং মাইনুটস মিটিং শেষের সর্বোচ্চ ২ দিনের মধ্যে আগত সবাইকে মেইল করা ভাল।

৯.মিটিঙের কাজের ধারা এজেন্ডা ভিত্তিক এগোতে হয়। এলোমেলো, বিক্ষিপ্ত আলাপ, এজেন্ডার বাইরে অন্য ইস্যু, নিয়ন্ত্রনহীন আলোচনা চলবে না। প্রতিটি এজেন্ডাতে যার যার কথা বলার দরকার, তাকে সংক্ষেপে তার মতামত দিয়ে দ্রূত সিদ্ধান্ত প্রণয়ন সভাপতির কারিশমা।

১০.মিটিঙে যতক্ষন সভাপতি না বলেন, বাইলেটারাল, অর্থাৎ নিজেদের মধ্যে কথা বলা ‍উচিৎ না। মিটিং চলাকালে কেউ যদি কোনো মতামত দিতে চান, তবে হাত তুলবেন। সভাপতি অনুমতি দিলে তবেই তিনি কথা বলবেন।

১১.মিটিঙের মাঝখানে কেউ বাইরে যেতে চাইলে অনুমতি নেবার দরকার নেই। হ্যা, মিটিং হতে কোনো জরুরী কারনে যদি স্থায়ীভাবে চলে যেতে হয়, তবে অনুমতি নিয়ে যাবেন। আবার মিটিঙের মাঝে কেউ হাজির হলে তার ঘটা করে সেটা জানান দেয়াটা আদবের বিপরীত। আবার উপস্থিত লোকদের পক্ষেও চেয়ার ছেড়ে দাড়িয়ে বা সালাম বিনিময় করে তাকে বরন করে নেয়াটাও মিটিঙের আদবের বিপরীত। নতুন আসা কেউ যেই পদবীরই হোন না কেন, তাকে চেয়ার ছেড়ে দেয়া অপ্রয়োজনীয়।

১২.সভাপতি সভা শেষ করে একবার রিক্যাপ করতে পারেন। তারপর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করবেন।

১৩.বেরোবার সময় রুমের ফ্যান, লাইট, এসি, জানালা বন্ধ করে দিন। নিজের চেয়ারটি গুছিয়ে রাখুন।

Collected From Jagojobs.bd



Related Posts

image

যে ৩ দক্ষতা জীবনে দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন আনে

24/09/2024

Career Advice

কর্মজীবন এবং ব্যক্তিগত জীবনে সাফল্য কেবল কঠোর পরিশ্রম এবং ত্যাগের মাধ্যমেই আসে না, প্রয়োজন আরও বেশি কিছু। কিছু বেসিক স্কিল আমাদের জীবনযাত্রার মান এবং ব্যক্তিগত বিকাশকে উন্নত করতে পারে। এই প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো আয়ত্ত

image

প্রতিদিনের যেসব অভ্যাস আপনাকে সফল করবে

24/09/2024

Career Advice

সাফল্য একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং অবিচলিত প্রচেষ্টা। একবারে সবকিছু করার চেষ্টা করার পরিবর্তে, প্রতিদিন একটু একটু কাজ করলে তা আপনাকে আপনার লক্ষ্যের দিকে ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে। এটি আপনার স্বপ্নকে বাস্তবে

image

৫ মাসে আপনার জীবন পরিবর্তন করবেন যেভাবে

24/08/2024

Career Advice

২০২৪ শেষ হতে আর মাত্র ৫ মাস বাকি আছে। আসলে ৫ মাসও নেই, আরও কম। আমাদের মধ্যে অনেকেই বছরের শেষে নিজেকে আরও ভালো অবস্থানে দেখতে চান নিশ্চয়ই? সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি। সবার আগে ঝেড়ে ফেলতে হবে হতাশা। আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে