কিন্তু যে অভ্যাসে মানুষ একবার অভ্যস্ত হয়ে পড়ে তার থেকে ফিরে যাওয়া কঠিন হয়ে যায় অনেক সময়। অন্যদিকে কৃষিজীবী জীবনের বদলে শিল্প ও বাণিজ্যের যুগ উন্মোচনে বাড়তে থাকে বেসকারি চাকরির সুযোগ। আর বর্তমান সময়ে বেসরকারি চাকরির বাজারই প্রধান।
কিন্তু বেসরকারি চাকরি মানেইতো ব্যক্তি মালিকানার চাকরি। একক ব্যক্তির মতামতের ওপর নির্ভর করে ভালো মন্দ সব। সুবিধা অসুবিধা প্রত্যক্ষ করেন মালিকপক্ষ সরাসরি।
তাই এখানে সুবিধাগুলো যেমন আছে তেমনি কিছু অসুবিধাও আছে। যখন তখন যেমন একটি চাকরি জুগিয়ে নেয়া যায় তেমনি আবার যখন তখন চাকরিটি চলেও যেতে পারে খুব সহজে।
এখন এই প্রতিযোগিতার বাজারে চাকরি পাওয়া কঠিন হলেও চাকরিচ্যুত হওয়া মোটেও কঠিন নয়। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাকালীন এই সময়ে বেসরকারি চাকরি চলে যাওয়া যেন শিশুর হাতের মোয়ার মতন।
ইচ্ছা অনিচ্ছায় কর্মী ছাঁটাই চলছে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই। কম বেশি অনেক প্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মন্দাভাবে। একইভাবে সরকারি চাকরিও চলে যেতে পারে।
যদিও এর আশঙ্কা কম। তবুও হতে পারে। যদি হঠাৎ চাকরিটা চলেই যায় তবে বিষণ্ণতায় ডুবে যাবার কিছু নেই। সময় বলছে, কারো চাকরিই চিরস্থায়ী নয়। যে কোনো কারণেই সামনে এসে দাঁড়াতে পারে এমন একটি মন্দাকাল।
• সময়কে অনুধাবন করতে শিখুন। চোখ চারদিকে দিন। চাকরি চলে যাবার ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে।
• যদি হঠাৎ চাকরিটা চলে যায়, ভেঙে পড়ার কিছু নেই।
• বিকল্প একটি কাজ বা কাজের চিন্তা আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখুন।
• যা উপার্জন তার সবটাই উড়িয়ে না দিয়ে কিছুটা সঞ্চয়ী হোন। আপদকালীন সময়ে যেন তা দিয়ে কিছু একটা করা যায় বা কিছুটা সময় চলা যায়।
• পরিচয়ের পরিধি বাড়ান। যে কোনো অসুবিধায় যেন অন্যের সহযোগিতা পাওয়া যায়।
• নিজের কাজটুকু সর্বোত্তমভাবে পরিবেশন করার চেষ্টা করুন যাতে প্রতিষ্ঠান আপনাকে ব্যতিত কাউকে চিন্তা না করে।
• অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বাড়িয়ে নিন। অভিজ্ঞতার বিকল্প নেই। আবার দক্ষতাও প্রদর্শন করতে হবে। দক্ষ কর্মীকে সবাই পছন্দ করে।
• যদি হাতে সময় থাকে দ্বিতীয় কিছু একটা আয়ত্ত করে রাখুন বা চর্চা করুন।
• বিপদসংকুল সময়ের জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকুন। প্রস্তুতি যেকোনো দুঃসময়ে সাহস দেয়।
• নিজেকে অযোগ্য ভাববার কোনো কারণ নেই। সবার জন্য সব জায়গা নয়। নিজের ভালো লাগার জায়গাটি খুঁজে নিন বা তৈরি করে নিন।
• যখন যাই করুন না কেন, আস্থাভাজন হবার চেষ্টা রাখুন। মালিকপক্ষ সবসময়ই কর্মঠ ও সৎ ব্যক্তির ওপর নিজের আস্থা রাখতে পছন্দ করেন।
• একটি কাজকে আঁকড়ে না থেকে হাতের কাছে যা পান, তাতেই হাতটি ঝালাই করে রাখুন। নড়বড়ে এই সময়ে বেঁচে থাকার জন্য একটির বদলে অন্যটি নিয়েও যেন বেঁচে থাকা যায়।
• পরিবারের লোকজনকে সব বিষয় বুঝতে দিন। খারাপ সময়গুলোতে পরিবারের সহযোগিতা ও মানসিক সাহায্য স্থির থাকতে সহযোগিতা করে।
• কোনো কারণেই হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না। প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে জীবন মানেই যুদ্ধক্ষেত্র। সামান্য অলক্ষ্যেই নেমে আসতে পারে পরাজয়। সুকৌশলে আসতে পারে সমুন্নত বিজয়।
• বিপদের সময়ে এমন ভাববার কোনো কারণ নেই যে, একটি চাকরি চলে গেলে আর চাকরি পাওয়া যাবে না। হয়তো সময় লাগবে একটু কিন্তু চাকরি আবার মিলবেই। অভিজ্ঞতা বৃথা যায় না। যদি দক্ষতা থাকে মধ্যবর্তী সময়কে ব্যবহার করা যায়।
• দুশ্চিন্তায় পড়ে হাবুডুবু খাওয়ার কারণ নেই। সাহস ও ধৈর্যকে স্থির রেখে আত্মবিশ্বাসকে প্রগাঢ় রাখলে সময়কে অস্থির মনে হবে না। মনে রাখতে হবে ভালো সময়ের পাশাপাশি মন্দ সময়ও হাঁটে। ঘটনাচক্রে মন্দ সময় সামনে আসলে বুঝতে হবে ভালো সময় অপেক্ষা করছে। মনোবল হারালে চলবে না।
Collected From Rtvonline