সুন্দর আর আনন্দময় জীবন তো বটেই; ইচ্ছা-অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজেদের নির্বাহ করতেই দৌড়াতে হয় চাকরি নামক শব্দটির সঙ্গে। যা হোক এতো বললাম আট-দশটা স্বাভাবিক জীবন আর সেসব মানুষের কাজের কথা। কিন্তু ভাবুন তো, আগামী ১০, ২০ বা ৫০ বছর পরের কথা; এবং সে-সময়ের স্বপ্নবান মানুষগুলোর কথা। একটু চিন্তা করুন, দুনিয়ার তথ্য-প্রযুক্তি বর্তমান দৌড় অব্যাহত থাকলে কোনো কোনো জব সবার ঘুম কেড়ে নেবে? মানবসম্পদ নিয়ে বিশ্বে স্বনামধন্য কিছু গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও ম্যাগাজিনের ভবিষ্যৎবাণী বিশ্লেষণ করে স্বপ্নময় ৫টি কাজের খবর নিয়ে প্রথম সংখ্যার এ বিশেষ আয়োজন।
লিখেছেন- গোলাম রাব্বী।
নৈতিক হ্যাকার
ওয়েবের কাজের পাশাপাশি একই সঙ্গে চলে আসে সাইবার নিরাপত্তার ব্যাপারটি। কেননা আমরা প্রায়ই নাসার মতো নামিদামি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানও হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়ার কথা শুনতে পাই। যেহেতু চোরই জানে ভালো চুরিবিদ্যা; আর বিশেষজ্ঞরা এটাও বিশ্বাস করেন- চোরই জানে কীভাবে ব্যবস্থা নিলে চুরি বন্ধ করা যাবে। সেজন্য যেসব হ্যাকাররা হ্যাকিং জ্ঞানকে পজিটিভ অর্থে কাজে লাগিয়ে হ্যাকারদের হাত থেকে প্রতিষ্ঠানের তথ্যকে রক্ষা করে তারাই নৈতিক হ্যাকার। এমন হ্যাকারদের হায়ারিং এখন বাড়ছে ৮৭ শতাংশ।
ফুড কেমিস্ট
খাদ্যে ভেজাল কথাটি পুরনো নয়। এমনকি শুধু বাংলাদেশ নয়, আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন মাত্র ক’বছর আগেই নামিদামি ব্র্যান্ডের গুঁড়াদুধে মেলা নিন পাওয়া নিয়ে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে কত তুলকালাম বেধে গিয়েছিল। তাই বিজনেস ইনসাইডার ম্যাগাজিনের মতে-বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন কাজে জড়িত লোকের কাজ ও বেতন বাড়বে অন্তত ৬৫ শতাংশ।
ওয়েব ও সফট্ওয়্যার ডেভেলপার
বিশ্ব যতই ডিজিটাল ও বৈশ্বিক হচ্ছে ততই বাড়ছে প্রযুক্তির প্রতি আমাদের নির্ভরতা। ঠিক একইভাবে এখন আর কেউ নিজ বা অন্যের ব্যক্তিজীবন বা প্রতিষ্ঠানের হালচাল জানতে কারও শরণাপন্ন না হয়ে, ঢু মারে ওয়েব পেজে। তাই আগামীর বিশ্বে প্রযুক্তির চাকরির মধ্যে ওয়েবসাইট ডেভেলপার ও চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে সফট্ওয়্যার তৈরি, সমস্যা-সমাধান ও পরামর্শকদের কদর ততই বাড়ছে ও বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের ফরবেস ম্যাগাজিনের এক জরিপে দেখা গেছে- ২০৩০ সালের মধ্যে ওয়েব ও সফট্ওয়্যার খাতের লোকদের প্রয়োজন আরও ৭৬ শতাংশ বাড়বে।
এপিডেমিওলোজিস্ট
শুরুতেই বলে নেই এপিডেমিওলোজিস্ট মানে কী? এর বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘রোগ নির্ণয়কারী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার’। দেখতেই পাচ্ছেন বর্তমানে ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত কত মানুষ আফ্রিকা অঞ্চলসহ বিশ্বে ধুঁকে ধুঁকে মরছে। কিছুদিন আগেও সোয়াইন ফ্লু, বার্ড ফ্লু, এইচ-ওয়ান এন-ওয়ান ভাইরাস মানুষকে অনেক ভুগিয়েছে। এমন সব ভাইরাসের উৎপাত ঠেকাতে প্রথমেই দরকার রোগ নির্ণায়ক বিদ্যান। একই সঙ্গে দিনকে দিন বাড়ছে নানা রোগ। সে-হিসেবে দ্রুত রোগ নির্ণয় করতে এপিডেমিওলোজিস্টদের চাহিদা ও বেতন বহুলাংশেই বাড়বে।
ফার্মাসিস্ট
রোগ নির্ণয়ের পরই যার কথা আসে তা হল ওষুধ তৈরি। সে কাজটিই করেন ফার্মাসিস্টরা। আগামীতে অভিজ্ঞ ফার্মাসিস্টদের মূল্য বহু গুণেই বাড়বে বলে মনে করেন মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞরা। কেননা এপিডেমিওলোজিস্টদের রোগ নির্ণয় করেই শেষ; এরপরই দৌড় শুরু হয় ফার্মাসিস্টদের।
লজিস্টিশিয়ান
স্বল্প পরিসরে অফিস সাজানো-গোছানো থেকে শুরু করে আপনার প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করতে যারা ব্যস্ত থাকেন লজিস্টিশিয়ানরা। আপনার অফিস স্পেস ও খরচ যত কম হবে; প্রতিষ্ঠান যতটা গোছালো ও সুন্দর হবে, সেখানে কাজের পরিবেশও ততটা আধুনিক, উন্নত ও লাভজনক হবে; এটাই তো স্বাভাবিক, তাই নয় কি? যেহেতু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়ছে তেমনি লজিস্টিক সাপোর্টারদের চাহিদাও বাড়ছে জ্যামিতিক হারে।
জানলেন তো স্বপ্নময় ৫ চাকরির খোঁজখবর। এবার আপনার পালা। শুরু করুন, আর লাফিয়ে পড়ুন, স্বপ্ন পূরণের কাজে। দেখবেন আগামীর আলোচিত ৫টি জবের একটি আপনার হাতের মুঠোয়।
Collection From Jugantor