Facebook Youtube Twitter LinkedIn
Inspiration

চাকরি পরীক্ষায় কাল্পনিক সংলাপ লেখার নিয়ম

image

চাকরির বিভিন্ন পরীক্ষায় কাল্পনিক সংলাপ লিখতে বলা হয়। সংলাপ কীভাবে লিখলে ভালো নম্বর পাওয়া যায়, এখানে আলোচনা করা হলো। শুরুতে পুরাতন বিসিএসের প্রশ্নগুলো দেখে নেওয়া যেতে পারে। ৪১ তম বিসিএস: বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনে উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্ব সম্পর্কে ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে একটি কাল্পনিক কথোপকথন বা সংলাপ রচনা করুন। ৪০তম বিসিএস: পড়াশোনা শেষ করে চাকরিগ্রহণ এবং স্ব-উদ্যোগে গৃহীত কোনো কাজের মাধ্যমে জীবিকানির্বাহকরণ সম্পর্কে দুই বন্ধুর মধ্যে একটি সংলাপ রচনা করুন। ৩৮ তম বিসিএস: বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রবীণ শিক্ষক এবং অধ্যয়নরত একজন তরুণ শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষার অতীত ও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে একটি কাল্পনিক সংলাপ রচনা করুন। ৩৭ তম বিসিএস: বিদেশে পড়াশোনা করে প্রবাসজীবন নির্বাচন এবং বাংলাদেশে লেখাপড়া করে স্বদেশেই অবস্থান করা সম্পর্কে দুই বন্ধুর কথোপকথন বা সংলাপ লিখুন। ৩৬ তম বিসিএস: একজন প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা এবং স্বাধীনতা পরবর্তী এক তরুণের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে সংলাপ লিখুন। ৩৫ তম বিসিএস: ১০ বছরের একটি ছেলে হারিয়ে গেছে। ছেলেটির মা-বাবা গেছে থানায়। পুলিশ মামলা নিতে চাইছে না। ছেলেটির মা-বাবা এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্র অবলম্বন করে এই পরিস্থিতির উপযুক্ত সংলাপ রচনা করুন।
সংলাপ লেখার নিয়ম
১. প্রথমে প্রশ্ন অনুসারে একটি শিরোনাম তৈরি করে নিতে হবে। যেমন: ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে সংলাপ’। শিরোনামের নিচে দাগ দিতে পারেন।
২. এরপর সংলাপের স্থান ও সময় উল্লেখ করবেন। এটি সাধারণত প্রশ্নে দেওয়া থাকে না। তাছাড়া স্থান ও সময়ের নিচে তৃতীয় বন্ধনীতে একটি পরিপ্রেক্ষিত তৈরি করে নিবেন। যেমন: স্থান: একটি বাজার। সময়: ছুটির দিন। সকাল দশটা। (এক কেজি ডাল কেনার পর দাম দিতে গিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে কথোপকথন।)
৩. কথা বলার সময় আমাদের নানা রকম অভিব্যক্তি হয়। সংলাপ রচনার সময় প্রথম বন্ধনীতে অভিব্যক্তি দিতে হবে। যেমন: (হেসে), (দীর্ঘশ্বাস ফেলে), (রেগে গিয়ে) ইত্যাদি। এ রকম অন্তত চার-পাঁচটি সংলাপে অভিব্যক্তি দেবেন।
৪. চরিত্রের নড়াচড়া ও আগমন-প্রস্থান তৃতীয় বন্ধনীতে দেখাতে হবে। যেমন: [বিক্রেতা আরেকটি প্যাকেটে আলু ভরতে লাগল।]
[আরেকজন ক্রেতার আগমন।]
৫. সংলাপ কার কার মধ্যে হবে, সেটি প্রশ্নে নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকে। তবে উত্তর করার সময় তৃতীয় আরেকটি চরিত্র তৈরি করে নিলে ভালো হবে। যেমন, ক্রেতা-বিক্রেতার সংলাপে আরেকজন ক্রেতাকে ঘটনার মধ্যে আনা যায়। তৃতীয় চরিত্রের সংলাপ মাত্র একটি দিতে হবে। সে মোটেই মুখ্য ভূমিকা পালন করবে না। তার আগমন ও প্রস্থান তৃতীয় বন্ধনীতে দেখাতে হবে।
৬. সংলাপে আঞ্চলিকতা পরিহার করতে হবে। তবে দরিদ্র কৃষক, রিকশাওয়ালা ইত্যাদি চরিত্রের সংলাপ লেখার সময়ে ক্রিয়াপদে ও দু-একটি শব্দে সামান্য আঞ্চলিকতা রাখবেন।
৭. সংলাপের শুরু বা শেষ বলে কিছু নেই। শুরুটা কোত্থেকে হচ্ছে, সেটা শুরুর পরিপ্রেক্ষিতে লিখে দিলেই হয়। শুভেচ্ছা বা সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে যে শুরু করতে হবে, এমন নয়। আবার শেষ করার ক্ষেত্রে সময়ের দিকে তাকিয়ে কাজ করতে হবে। সময় শেষ হয়ে গেলে এভাবে লিখতে হবে: [এরপর দুজনের মধ্যে আরও কিছুক্ষণ কথা চলল এবং ক্রেতা গজগজ করতে করতে চলে গেলেন।]
৮. একটি বা দুটি সংলাপ একটু দীর্ঘ হবে, যেখানে কিছু তথ্য থাকবে।
৯. কখনো কখনো চরিত্র মনে মনে কথা বলে। এ রকম সংলাপকে বলা হয় স্বগতোক্তি। সংলাপ রচনার সময়ে একটি স্বগতোক্তি দিতে হবে।
পরীক্ষায় সংলাপের বিষয় লেখা থাকবে। প্রস্তুতি নেওয়ার সুবিধার্থে এখানে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হলো: জলবায়ু পরিবর্তন, সড়ক দুর্ঘটনা, শিক্ষাক্ষেত্রে করোনার প্রভাব, সাইবার অপরাধ, খাদ্যে ভেজাল, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশের অর্জন, সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার, মাদকের কুপ্রভাব, বৃক্ষরোপণের উপযোগিতা ও নৈতিকতার অবক্ষয় ইত্যাদি।
কার কার মধ্যে সংলাপ হবে, সেটি প্রশ্নে সাধারণত উল্লেখ থাকে। সংলাপ হতে পারে বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে; যেমন: মা-বাবা, বাবা-মেয়ে, মা-ছেলে, ভাই-বোন, দাদা-নাতি, দুই বন্ধু, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ক্রেতা-বিক্রেতা, ডাক্তার-রোগী, রিকশাওয়ালা-যাত্রী, পুলিশ-ব্যক্তি, গ্রাহক- ব্যাংক কর্মকর্তা, প্রবীণ-নবীন ইত্যাদি।
বিশেষ নির্দেশনা
প্রশ্নে উল্লেখ না থাকলে চরিত্রের নাম না দেওয়াই ভালো। যেমন: রহিম, করিম না লিখে বন্ধু-১, বন্ধু-২ লেখা ভালো। চরিত্রের পরে, সংলাপে আগে কোলন চিহ্ন দিতে হয়। যেমন: ক্রেতা: তাই বলে এক মাসের মধ্যে এত দাম বেড়ে যাবে? প্রতিটি সংলাপের কোলন চিহ্নগুলো এক বরাবর থাকবে। সময়ের দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। সংলাপের সংখ্যা হতে পারে ১৫ থেকে ২০টি।
সংলাপের একটি নমুনা
বইয়ের গুণগত মান নিয়ে বইমেলায় লেখক ও পাঠকের মধ্যে সংলাপ।
স্থান: বইমেলা।
সময়: সন্ধ্যা ৭টা।
[লেখকের অটোগ্রাফ নেওয়ার পর পাঠক ও লেখকের মধ্যে কথোপকথন শুরু হলো।]
পাঠক: (খুশি খুশি গলায়) আপনার অটোগ্রাফ পেয়ে আমার কী যে ভালো লাগছে, বলে বোঝাতে পারব না।
লেখক: (গম্ভীর স্বরে) হুম্।
পাঠক: গতবছর বইমেলাতে এসে আপনার নতুন বইয়ের খোঁজ করেছিলাম। কিন্তু আপনি মনে হয়, গতবছর কোনো নতুন বই লেখেননি।
লেখক: শুধু গত বছর না, গত দু-তিন বছর আমার কোনো নতুন বই বের হয়নি।
পাঠক: (অবাক হয়ে) মানে!
লেখক: একটি বই চাইলেই তো বের করা যায় না। আমি যে ধরনের বই লিখি, তাতে আমাকে অনেক পড়তে হয়। তারপর চিন্তা করে বিষয়টিকে আমি আমার মতো উপস্থাপন করি।
পাঠক: বুঝেছি। এই জন্যই অনেকে যেখানে বছরে দু-চারটা বই বের করে, আপনার সেখানে দু-চার বছরে একটা বই বের হয়।
লেখক: আমি মনে করি না, সংখ্যা দিয়ে লেখকের মান বিচার হয়।
পাঠক: (হাসতে হাসতে) অথচ আমরা মনে করি, যার যত বই, সে তত বড়ো লেখক।
[আরেকজন পাঠক অটোগ্রাফ নিতে লেখকের দিকে এগিয়ে এলেন।]
পাঠক-২: আমার এই বইয়ে একটা অটোগ্রাফ দিন না! [লেখক দ্বিতীয় পাঠকের বইয়ে নাম স্বাক্ষর করে দিলেন। দ্বিতীয় পাঠক খুশি মনে চলে গেল।]
লেখক: এই যে একজন অটোগ্রাফ নিল, দেখলেন তো! [প্রথম পাঠক লেখকের দিকে তাকিয়ে রইলেন।]
লেখক: যে বইয়ে আমি স্বাক্ষর দিলাম, সেটির গুণগত মান নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়। এর কাগজ, ছাপা, মেকাপ কোনোটাই ভালো না। তার ওপর বইয়ের যে নাম আর প্রচ্ছদের যে ধরন, তাতে মনে হয় না লেখক-প্রকাশক এসব ব্যাপারে সচেতন ছিলেন।
পাঠক: একটু আগে বইমেলায় ঘোষণা শুনছিলাম, মাইকে বলছিল, আজ মেলায় সাড়ে তিনশো নতুন বই এসেছে। এর মানে এক মাসে দশ-বারো হাজার নতুন বই বের হবে। আমার তো মনে হয়, এর শতকরা আশি ভাগ বইই মানসম্পন্ন নয়। গল্প-উপন্যাস-নাটক-কবিতার বইয়ের খুব অল্প সংখ্যকই মানসম্পন্ন। তাছাড়া শিশুদের বইয়ের মান নিয়েও প্রশ্ন আছে। এগুলো দেখার কি কেউ নেই?
লেখক: (স্বগতোক্তি) লেখক-প্রকাশক সচেতন না হলে, বাইরের কে এগুলোর মান নির্ধারণ করবে!
পাঠক: আপনি কিছু ভাবছেন?
লেখক: (অন্যমনস্ক ভঙ্গিতে) না, আপনি ঠিকই বলেছেন। [লেখক মেলার এদিক-ওদিক তাকাতে থাকলেন।]
পাঠক: (ইতস্তত করে) আমি মনে হয়, আপনার অনেকখানি সময় নিয়ে ফেললাম। ... আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনার অটোগ্রাফের জন্য।
লেখক: আপনাকেও ধন্যবাদ।
[পাঠক চলে গেল।]
Collected from prothomalo


Related Posts

image

কাজে মনোযোগ বাড়ানোর ৪ উপায়

24/09/2024

Inspiration

আপনি কি ইদানীং কাজ করতে গিয়ে হাঁপিযে ওঠেন? সব সময় ক্লান্ত লাগে আর অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়েন? এসবের প্রভাব নিশ্চয়ই পড়তে শুরু করেছে আপনার কাজের ফলাফলেও? বর্তমান প্রতিযোগিতাশীল বিশ্বে চাপ কোথায় নেই? তাই কর্মক্ষেত্রে চাপ অনুভ

image

What to Consider When Setting Career Goals

24/08/2024

Inspiration

While the everyday tasks at your job obviously need to get done, it’s also just as important to have long-term career goals—whether it’s because you are looking to eventually move up the corporate la

image

3 keys to unlock the power of employees

24/08/2024

Inspiration

In your workplace, employee culture is your only sustainable competitive advantage. To win today, you need people who can react quickly and make decisions autonomously. Your culture — the shared values and shared pr