সরকারি চাকরিতে প্রতিবছর বেতন বাড়ার নিয়ম থাকলেও অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তেমনটা দেখা যায় না। এ ক্ষেত্রে বেতন বাড়ানোর জন্য বসের কাছে নিজেকেই যেতে হয়। কিন্তু বসকে বেতন বাড়ানোর কথা বলা কঠিন কাজগুলোর মধ্যে একটি, তবু বলতে হয়। কারণ, যদি না বলেন, তাহলে বেতন না–ও বাড়তে পারে। অফিসে বেতন বাড়ানোর কথা বলার জন্য কীভাবে কথা শুরু করবেন, যদি সে বিষয়ে নিশ্চিত না হন, তাহলে এখানে আপনার জন্য কয়েকটি পরামর্শ তুলে ধরা হলো।
জরিপ করুন
বসকে বেতন বাড়ানোর কথা বলার আগে নিজে নিজে ছোট একটা জরিপ করুন। আপনি অফিসে যে ধরনের কাজ করেন অন্য অফিসে ঠিক একই ধরনের কাজ করা কাউকে খুঁজে বের করুন। আপনার অভিজ্ঞতা ও বেতনের সঙ্গে তার বেতন তুলনা করুন। যদি দেখেন আপনি কম পাচ্ছেন, তাহলে সেটিকে বসের কাছে উদাহরণ হিসেবে দেখান। শুধু শুধু বেতন বাড়ানোর কথা বলে লাভ নেই। যখন আপনি রেফারেন্সসহ বলতে পারবেন, তখন অফিস আপনার যুক্তি মানতে রাজি হবে।
কাজের পরিসংখ্যান তুলে ধরুন
চাকরির বাজারে জরিপ করার পর নিজের সম্পর্কে নিজেই একটা ধারণা পাবেন। বর্তমান কাজ অনুযায়ী আপনার বেতন কত হওয়া উচিত, সে সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন। সারা বছরে কাজের মাধ্যমে আপনি কী কী অর্জন করেছেন, তার তালিকা করুন। আপনার নতুন প্রশিক্ষণ ও নতুন অর্জন করা দক্ষতাও তালিকায় তুলতে ভুলবেন না। কাজের তালিকা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতাগুলো বসকে দেখান। আগের বছরের চেয়ে ভালো হলে আপনাকে বেতন বাড়ানোর কথা বলতে হবে না। বস নিজে থেকেই বেতন বাড়িয়ে দিতে চাইবেন।
সামনাসামনি কথা বলুন
মুঠোফোনে বা ই-মেইলের মাধ্যমে বললে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই বসের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে কথা বলুন। ক্যারিয়ারবিষয়ক কোচ অক্টাভিয়া গোরেডেমা পরামর্শ দিয়েছেন, বসকে বেতন বাড়ানোর সময় কী কী বলবেন, সেগুলো বাসায় আয়নার সামনে কয়েকবার অনুশীলন করে নিতে। কারণ, আপনি বসের সঙ্গে কীভাবে কথা বলবেন তার ওপর বেতন বাড়ানো অনেকাংশে নির্ভর করে।
সময় নির্দিষ্ট করুন
বসের সঙ্গে কথা বলার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বের করুন। আগে থেকেই জেনে নিন বস কোন সময়ে ফ্রি থাকেন। ঠিক সে সময়টা বেছে নিন। কথা বলার সময় আত্মবিশ্বাসী থাকুন। বিশ্বাস রাখুন, যে বেতন চাচ্ছেন, সেটার যোগ্য আপনি। ভয় পাবেন না। আপনার যুক্তি যত বিশ্বাসযোগ্য হবে, বেতন বাড়ার সম্ভাবনা তত বাড়বে।
পেশাদারত্ব বজায় রাখুন
বেতন বাড়ার খুদে বার্তা পাওয়ার পর নিজেকে গুটিয়ে রাখবেন না, বরং নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করুন। বেতন বাড়ানোর সময় আপনি বসকে যে অঙ্গীকার করেছেন, সে অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করুন। বেতন বাড়ার হার যতই হোক না কেন, সেটাকেই সফলতা হিসেবে মেনে নিন। তাহলে সফল হতে পারবেন এবং ক্যারিয়ারে এগিয়ে যেতে পারবেন। যদি অসন্তুষ্ট হয়ে সঙ্গে সঙ্গে পদত্যাগ করতে যান, তাহলে প্রতিষ্ঠান মনে করবে আপনার মধ্যে পেশাদারত্ব নেই। কিছুটা সময় নিয়ে তারপর সিদ্ধান্ত নিন।
Collected from prothomalo