Facebook Youtube Twitter LinkedIn
Job Life

পেশাগত ও ব্যক্তিগত দক্ষতা কাজে লাগাবেন যেভাবে

image

চাকরি পাওয়ার জন্য যে দক্ষতার প্রয়োজন হয়, অদ্ভুত ভাবে বেশিরভাগ প্রার্থীর মধ্যেই সেগুলোর অভাব থাকে। ফলে অনেকেই যথাসময়ে চাকরি পান না। চাকরি পাওয়ার জন্য প্রার্থীকে যে দক্ষতাগুলো অর্জন করতে হয়, সেগুলোকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়- পেশাগত দক্ষতা ও ব্যক্তিগত দক্ষতা। চাকরির আবেদনের সময় প্রার্থীকে এই দক্ষতাগুলো উপস্থাপন করতে হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পেশাগত ও ব্যক্তিগত দক্ষতার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। কারণ কিছু দক্ষতা নিজে থেকেই অর্জন করতে হয়, আর কিছু দক্ষতা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার মাধ্যমে অর্জন করতে হয়।

নেতৃত্ব, সামাজিক যোগাযোগসহ আরও অনেক দক্ষতা অর্জন করতে হয় ব্যক্তিগত পরিসরে। অন্যদিকে যেগুলো কর্মশালা, প্রশিক্ষণ ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে অর্জন করতে হয় সেগুলো হলো প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা। যেমন- সফটওয়্যার সম্পর্কে জানা, ভিডিও এডিটিং ও ফটোশপ অনুশীলন, ডিজিটাল ও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, অ্যানিমেশন, ওয়েব ডেভেলপিংসহ একাধিক দক্ষতা। এসব দক্ষতা বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়।
পেশাগত দক্ষতা

একজন প্রার্থী যখন চাকরির আবেদন করেন, তখন সিভিতে এসব দক্ষতার উল্লেখ করতে হয়। কারণ প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুসারে দক্ষতা থাকলে চাকরির নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হয় না। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার মধ্য দিয়ে অফিসের নানা কাজে পারদর্শী হয়ে ওঠা সম্ভব।

নিয়োগের সময় চাকরিদাতা প্রার্থীর দক্ষতাগুলো যাচাই করে দেখেন। যে পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন, তিনি আদৌ সেই কাজের উপযোগী কি না সেটি ভালোভাবে ঝালিয়ে নেন। ভাইভা বোর্ডে কাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে চাকরিদাতারা জেনে নিতে চান, প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া উচতি হবে কি না?

কর্মসংস্থান বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভাইভা বোর্ডে যাওয়ার আগে প্রার্থীকে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে পড়াশুনা করতে হবে। এতে তিনি প্রতিষ্ঠানের কাজের চাহিদা সম্পর্কে ধারণা পাবেন। প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে পরিচালিত হয়, কারা এর পরিচালক কিংবা কী ধরনের কাজ সেখানে হয়- এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে।

ভাইভার সময় চাকরিদাতারা নানা প্রশ্নের মাধ্যমে প্রার্থীকে আটকাতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রার্থীকে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। কারণ আত্মবিশ্বাসী ও কাজপাগল মানুষজনের জন্য চাকরিই অপেক্ষা করতে থাকে। অর্থাৎ সব প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে চাকরির অফার দেওয়া হয়।

ব্যক্তিগত দক্ষতা

চাকরির আবেদন করার আগে পেশাগত দক্ষতার পাশাপাশি ব্যক্তিগত দক্ষতার প্রয়োজন হয়। যেমন কোনো প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য অথবা পরিচালনার জন্য প্রার্থীকে নের্তৃত্ব দিতে হতে পারে। তাই নের্তৃত্বের গুণগুলো অর্জন করা উচিত।

১. কর্মক্ষেত্রে প্রায়ই পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হয়। পেশাদারিত্বের ব্যাপারে সচেতন না হলে প্রার্থী চাকরিতে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারবেন না। অফিসে কাজের প্রয়োজনে তাকে অনেক মানুষের সঙ্গে চলাফেরা করতে হতে পারে। তাই একজন প্রার্থীকে কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা ও পেশাদারিত্ব অর্জন করতে হবে।

২. প্রার্থীর মধ্যে অবশ্যই ভালো গুণ থাকতে হবে। কারণ একজন সৎ কর্মী দ্রুত সফলতা অর্জন করতে পারেন। ভালো গুণাবলীর অভাব থাকলে অফিসের কেউ তাকে বিশ্বাস করবে না।

৩. যেকোনো কাজের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া ভালো একটি অভ্যাস। সব ধরনের কাজ করতে পারেন এমন প্রার্থীকেই নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ পছন্দ করেন। যাদের মধ্যে মাল্টি-টাস্কিং অ্যাক্টিভিটি রয়েছে, কর্মজীবনে তারাই দ্রুত সফলতা অর্জন করতে পারেন।

৪. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা হলো প্রার্থীকে সমস্যা সমাধানের উপায় জানতে হবে। কারণ অফিসে ছোটখাটো বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধানের উপায় বের করলে সহকর্মীদের কাছে আলাদা গুরুত্ব পাওয়া যায়। তাছাড়া নিয়োগের সময় প্রার্থীর সমস্যা সমাধানের দক্ষতা আছে কি না সেটি যাচাই করে দেখা হয়।

৫. অনেক নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ মনে করেন, প্রার্থীকে নির্ভরযোগ্য হতে হবে। পুরো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব সামলানোর সক্ষমতাও থাকা জরুরি। একজন নির্ভরযোগ্য কর্মী চাকরিতে দ্রুত সফলতা অর্জন করতে পারেন।

৬. ব্যবহারে বংশের পরিচয়। প্রার্থীর ব্যবহার হতে হবে ভদ্র। রগচটা মেজাজ ও অভদ্র মানুষকে কখনোই চাকরি দিতে চান না নিয়োগকারীরা।

৭. আত্মবিশ্বাসী, কর্মোদ্যমী ও সৃজনশীল মানুষেরা কর্মক্ষেত্রে দ্রুত পদোন্নতি লাভ করতে থাকেন। তাই প্রার্থীকে অবশ্যই আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। কাজের প্রতি উদ্যমী মানুষকে অফিসের সবাই সমীহ করেন। একই সঙ্গে সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী মানুষকে সবাই ভালোবাসে।

৮. চাকরির বাজারে স্থিতিশীল হওয়ার জন্য কারও কথায় প্রভাবিত হওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। প্রার্থীকে স্ব-নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। অর্থাৎ নিজের মতো করে ভাবতে এবং তা প্রকাশ করতে শিখতে হবে। স্ব-নিয়ন্ত্রিত মানুষকে সবাই ভালোবাসে।

৯. প্রতিনিয়তই আমরা শিক্ষা গ্রহণ করে থাকি। চাকরিতে সফলতা অর্জনের জন্য প্রার্থীর মধ্যে শেখার আগ্রহ থাকতে হবে। বদমেজাজী ও অহংকারী মানুষ কখনো চাকরিতে টিকে থাকতে পারেন না। তাই এমন অভ্যাস থাকলে দ্রুত পরিত্যাগ করা জরুরি।

১০. প্রার্থীকে অবশ্যই দলগত কাজে পারদর্শী হতে হবে। অফিসে সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে প্রায়ই ইভেন্ট, ফেয়ারওয়েল, ওরিয়েন্টেশনসহ আরও বিভিন্ন দলগত কাজ করতে হতে পারে। অনেক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাও করতে হয়। সেক্ষেত্রে প্রার্থীকে বহির্মূখী হতে হবে।

এই দক্ষতাগুলো কীভাবে কাজে লাগাবেন?

প্রশ্ন ওঠে, এই দক্ষতাগুলো কীভাবে কাজে লাগানো যায়? বিশেষজ্ঞরা বলেন, চাকরির আবেদনের সময় সিভিতে এই দক্ষতাগুলো উল্লেখ করলে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান আপনার সম্পর্কে ভালো ধারণা পাবেন। তাই আপনি যে কাজে দক্ষ, সেটি সিভিতে উল্লেখ করুন।

সিভিতে পেশাগত ও ব্যক্তিগত দক্ষতার সমন্বয় কীভাবে করবেন?

সিভিতে আপনার দক্ষতাকে দুটি ভাগ করুন। একটি ভাগে উল্লেখ করুন, আপনার সফট স্কিলগুলো। অর্থাৎ ব্যক্তিগত দক্ষতা। এখানে আপনি লিখতে পারেন নেতৃত্ব, দলগত কাজ, শেখার আগ্রহসহ একাধিক দক্ষতা।

আরেকটি ভাগে উল্লেখ করুন, টেকনিক্যাল স্কিল। অর্থাৎ আপনার পেশাদারি জ্ঞান ও দক্ষতাগুলো। এখানে চাকরিদাতাদের চাহিদামাফিক দক্ষতার ব্যাপারে উপস্থাপন করুন।
Collected from
dhakapost



Related Posts

image

Is your workplace really built for innovation?

24/08/2024

Job Life

Organizations that succeed are those that constantly improve themselves and their offerings. But don’t expect the few people at the top to be responsible for all the interesting new thinking in the organization.

image

What’s the plan to get the most out of employees?

24/08/2024

Job Life

Before you know it, you will be in the New Year Scramble. Tax season, big initiatives, exciting improvements in the works, and the goals list goes on. 

image

অফিসে স্মার্ট কর্মী হবেন যেভাবে

24/08/2024

Job Life

কর্মক্ষেত্রে সব কর্মী সমান হন না। একই পদে থেকেও কেউ হন স্মার্ট আর কেউ ধীরগতির। তবে স্মার্ট হওয়ার বিষয়টি চাকরির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর অনেকটাই নির্ভর করে কর্মীর পদোন্নতি ও অন্যান্য সুযোগ–সুবিধা। নিজের