বাবার স্বপ্ন পূরণ করতেই বিসিএসে অর্ণব
22/02/2024
564 Views
বাবার স্বপ্ন ছিল আমি বিসিএস ক্যাডার হব। বাবার অনুপ্রেরণায় আজ আমি ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রশাসন ক্যাডারে সহকারী কমিশনার ও এক্সকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পদে সুপারিশ প্রাপ্ত। প্রথম বিসিএস দিয়ে ক্যাডার হওয়ার গল্প বলছিলেন আল নাদরুন বিন আকন অর্ণব।
প্রথমবারের মতো ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রশাসন ক্যাডারে ২৪৮তম স্থান অধিকার অর্জন করেন অর্ণব। অর্ণব জানায়, ২০২০ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদ থেকে ¯œাতক এবং পোলট্রি বিজ্ঞান বিষয়ে ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করি।
টেকনিক্যাল বিষয়ে অধ্যয়ন করায় বিষয়ভিত্তিক ক্যাডার হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই স্নাতকে অধ্যয়নরত অবস্থায়ই ক্যাডার সার্ভিসে অংশগ্রহণের জন্য আগ্রহী হই। আমার প্রথম পছন্দ ছিল প্রশাসন ক্যাডার। কারণ বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার থেকেই উপজেলা, জেলা প্রশাসনসহ দেশের নীতিনির্ধারনী পর্যায়ের সব গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়া যায়। তাছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির ভূমিকায় ইউএনও মহোদয়ের উপস্থিতি এবং বক্তৃতা আমাকে এই সার্ভিসে অংশ নেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।
পশু সম্পদ ক্যাডার ছেড়ে প্রশাসন ক্যাডার কেন?
আমাদের বিষয়ভিত্তিক পশু সম্পদ ক্যাডারে কর্মরতরা দেশকে সর্বাত্মক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সেবা প্রদানের পাশাপাশি নীতিনির্ধারণের পর্যায়ে পশুপালনের গ্র্যাজুয়েটরা অংশগ্রহণ করতে পারলে প্রাণী সম্পদের উন্নয়ন আরও সম্ভাবনাময় হয়ে উঠবে। তাছাড়া পশুপালন অনুষদের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ক্যাডার সার্ভিসের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতার সঙ্গে বিচরণ করছে।
আর প্রশাসন থেকে যেহেতু এই নীতি নির্ধারণে বেশি ভূমিকা রাখা যায় তাই আমার পছন্দক্রমে প্রশাসনের অবস্থান ছিল শীর্ষে। তাছাড়া এনিম্যাল হাজবেন্ডি (পশুপালন) যেহেতু রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট এ বেশি গুরুত্ব দেয় তাই এটি প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
প্রিলিমিনারি প্রস্তুতির শুরুটা
স্নাতক চতুর্থ বর্ষে বিসিএসের সিলেবাস অনুসারে পড়া শুরু করলেও দৈনিক বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা পড়ার অভ্যাস ছিল। ইতিহাস বিষয়ক বিভিন্ন বই পড়ার আগ্রহ থাকায় বেসিক শক্তিশালী করতে সহায়তা করেছিল। এক কথায় প্রতিনিয়ত দেশ ও বিশ্বে চলমান ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে নিজেকে সংযুক্ত রাখা আবশ্যক।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য ৬-৮ মাস এর ধারাবাহিক পড়াশোনা এবং কৌশলে প্রস্তুতি নেওয়া হলে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি এর অনেকটা সম্পন্ন হয়ে যায়। যেহেতু লিখিত পরীক্ষায় সময় কম পাওয়া যায় এবং সিলেবাস অনেক বিস্তৃত তাই প্রিলির প্রস্তুতির সময় যেকোনো বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করা লিখিত প্রস্তুতির সিংহভাগ সম্পন্ন করবে।
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি
লিখিত পরীক্ষার উপরেই মূলত নির্ভর করে বিসিএস পরীক্ষার ফলাফল। লিখিত পরীক্ষার জন্য সময় ব্যবস্থাপনা এবং একটু ভিন্ন ধরনের লেখার জন্য চেষ্টা করেছিলাম। যা আমাকে সফলতার পথে এগিয়ে দিয়েছে।
মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি অনেক বিস্তৃত। যেহেতু এই বিষয়ে কোনো সিলেবাস নেই তাই যেকোনো ঘটনাই হোক না কেন সে সম্পর্কে অন্য কারও সঙ্গে ২-৪ মিনিট বলার অভ্যাস করেছিলাম। আমি আমার কাছের বন্ধু এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী বর্তমানে যে আমার সহধর্মিণী তার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতাম। এক্ষেত্রে সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধ ও চলমান ঘটনা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখা খুবই জরুরি।
সফলতার পিছনে কাদের অবদান
সৃষ্টিকর্তার কৃপা এবং পরিবারের সমর্থন ছাড়া আমার এই যাত্রায় সফলতা আসতো না। আমার বাবা-মা, একমাত্র বড় বোন, ভগ্নিপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী ও বর্তমানে আমার স্ত্রীর অপরিসীম সমর্থন ও সাহস জোগানের জন্য বিসিএসের এই দীর্ঘ যাত্রায় আমার জ্বালানি হিসেবে কাজ করেছে। ৪৩তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত হলেও ৪৪তম এবং ৪৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম।
Collected From Daily Janakantha