সফটওয়্যার ডেভেলপ নিয়ে প্রশিক্ষণের পর চাকরির সুযোগ করে দিচ্ছে প্রজেক্ট কোড প্রতিষ্ঠান। প্রথম ব্যাচের চার শিক্ষার্থীর প্রশিক্ষণ শেষে তাদের কার্যক্রমের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরতে রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরে ১০৪ নম্বর রোডে প্রজেক্ট কোডের নিজস্ব কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ অনুষ্ঠান হয়।
প্রজেক্ট কোডের প্রতিষ্ঠাতারা জানান, বিশ্বে যারা জুনিয়র ট্যালেন্ট রয়েছে, তাদের ট্যালেন্ট ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করতে প্রজেক্ট কোড কাজ করে যাচ্ছে। প্রথম ব্যাচ থেকে চারজন প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরি পেয়েছেন। দ্বিতীয় ব্যাচে ১০ জন শিক্ষার্থী হয়েছেন। তৃতীয় ব্যাচে ১২ শিক্ষার্থী কিছুদিনের মধ্যে প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। অনেক তরুণ রয়েছেন, যারা কারিগরি ক্ষেত্রে চাকরি করতে চাচ্ছেন, তাদেরই সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতারা আরও জানান, এখানে শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। শিক্ষাগত যোগ্যতা যা-ই থাকুক, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার মতো যাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা রয়েছে, তাদেরই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে তোলা হচ্ছে। পাস আউট শিক্ষার্থীরাও এখানে কোর্স করার সুযোগ পাচ্ছে। এতে সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেলিসিতে সবারই চাকরি নিশ্চিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, ‘সেকেন্ডারি লেভেলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত বেসিক প্রোগ্রামিং এবং কোডিংয়ের সূচনা করেছি। অনেক শিক্ষার্থী এখন মোটামুটি আইডিয়া পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং ও গাইডেন্সের প্রয়োজন রয়েছে। বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েটদের অনেক সময় দুর্বলতা দেখতে পাই। প্রজেক্ট কোডের দুই উদ্যোক্তা (সহোদর) যে হাইলেভেল কোডিং করার জন্য ইন্ডাস্ট্রির প্রিভেন্ট কোডিং, যেটা একটি অর্গানাইজেশনে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সেগুলো দেওয়ার জন্য এ প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এটি খুবই সময়োপযোগী প্রজেক্ট।’
এ বিষয়ে প্রজেক্ট কোডের প্রতিষ্ঠাতা ইশতিয়াক খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে নিয়ে যেতে চাই। এ জন্য গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড সলুশন দরকার। এটি বের করার জন্য আমরা ইউরোপে গিয়েছি। কোটবাড নামে একটি বুট ক্যাম্প রয়েছে। তাদের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারে কাজ করছি। কোটবাডে প্রোগ্রামটিতে খরচ হচ্ছে ১০ লাখ টাকা। আর জয়েন্ট ভেঞ্চারে আমাদের মাধ্যমে করলে সেটি খরচ পড়ছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা।’
প্রজেক্ট কোডের আরেক প্রতিষ্ঠাতা এরশাদ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও দক্ষ করে গড়ে তুলতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রশিক্ষণ নিয়ে তারাও নেতৃত্ব দেবেন, এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের কোম্পানির সঙ্গে আমাদের পার্টনারশিপ রয়েছে। দক্ষ ও প্রশিক্ষিত ব্যক্তিদের পেতে অনেক কাঠখড় পোহাতে হয় বিভিন্ন নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে। সেসব মাথায় রেখেই বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিতে দক্ষ লোক গড়ে তোলাই আমাদের উদ্দেশ্য। আমাদের বুট ক্যাম্পে প্রশিক্ষণের আগে বেশ কয়েকভাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।’
বেসরকারি মোবাইল ব্যাংকিং নগদের পরিচালক প্রশাসন শাহরিয়ার সাঈদ বলেন, ‘এখানে এসে যা দেখলাম, দক্ষতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে। আমরা যদি সেসব মানুষকে রিক্রুট করি, তারা ডে ওয়ান থেকে আমাদের কন্ট্রিবিউট করতে পারে। আমরা সব সময় অনুভব করি প্রতিষ্ঠানের পয়েন্ট অব ভিউ থেকে, টেকনোলজি বেস্ট যারা এ ধরনের কাজ করছে, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবো।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য নাহিদ এজাহার খান, জেমকন গ্রুপের পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদ, মেট্রোপলিটন চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলামসহ প্রশিক্ষণরত শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানের ইনস্ট্রাক্টররা।
Collected From Banglatribune