চট্টগ্রাম সিটি: চাকরি স্থায়ী করার দাবি অস্থায়ী কর্মীদের, মেয়রের আশ্বাস
চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর টাইগারপাসে সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী নগর ভবনের দোতলায় তারা বিক্ষোভ করেন।
তাদের অভিযোগ, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও মন্ত্রণালয়ের সম্মতি এবং এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামতের পরও’ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ‘অসম্মতিতে’ অস্থায়ীদের চাকরি স্থায়ী করার প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না।
আর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলম বলছেন, বিদ্যমান চাকরিবিধি অনুসারে অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারীদের স্থায়ী করার বিধান নেই। তাই এই প্রক্রিয়ায় তিনি সম্মতি দেবেন না।
সম্প্রতি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পর্ষদ সদস্য পদে বদলি হয়েছেন; শিগগিরই নতুন কর্মস্থলে যোগ দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তবে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী আগামী সপ্তাহ থেকে স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়া শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন বলে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন। ওই আশ্বাসের পর অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারীরা সন্ধ্যায় আন্দোলন স্থগিত করেন।
‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন অস্থায়ী কর্মচারী-কর্মকর্তা পরিষদ’ ব্যানারে প্রায় ৭ হাজার অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারী স্থায়ীকরণের দাবিতে এই আন্দোলন করছেন।
পরিষদের সদস্য সচিব সাজু মহাজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চলতি বছরের শুরুতে একনেক সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের বিষয়টি সদয় বিবেচনা করে চাকরি স্থায়ী করার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন। ওই সভায় মেয়র মহোদয় উপস্থিতি ছিলেন।
“এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকেও শূন্য পদে অস্থায়ীদের মধ্য থেকে নিয়োগ দিতে ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছে। সবশেষ মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে সিসিসির সাতজন বিসিএস কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটিও আমাদের স্থায়ী করার বিষয়ে মত দিয়েছে। কিন্তু প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাতে রাজি নন।”
বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভের একপর্যায়ে শ্রমিক নেতারা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে তাদের দাবি তুলে ধরেন।
জাতীয় শ্রমিক-কর্মচারী লীগের চট্টগ্রাম সিটির সভাপতি ফরিদ আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত মঙ্গলবার সাধারণ সভায় সিদ্ধান্তের পরও কাজ শুরু হয়নি। আমরা আজও দেখা করে উনাকে স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়া শুরুর অনুরোধ করেছি। কিন্তু উনি করবেন না। শুনেছি আজ-কালের মধ্যে তিনি চলে যাচ্ছেন।
“পরে আমরা মেয়রের সাথে দেখা করেছি। উনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন আগামী সপ্তাহ থেকে স্থায়ীকরণের কাজ শুরু করবেন। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এই নিয়োগ দেওয়া হবে। ওই আশ্বাস পেয়ে আমরা চলে এসেছি।”
প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
জানতে চাইলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলম বলেন, “তারা আমার সাথে দেখা করেনি। আমার নামে গালাগাল দিয়েছে। চাকরি স্থায়ী করার কোনো সুযোগ বিদ্যমান চাকরি বিধিমালায় নেই। সেটা আমি আগেও একাধিকবার বলেছি। তাই এটা আমি করতে অপারগ। আমার বদলির আদেশ হয়েছে। আমি চলে যাব।”
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত জনবল কাঠামো অনুযায়ী এক হাজার ৫৪৫টি শূন্য পদ আছে। চলতি বছর শেষে স্থায়ী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েকজন অবসরে যাবেন। তখন আরও শূন্য পদের সৃষ্টি হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
Collected from bdnews24