উখিয়া-টেকনাফের ২৪ ক্যাম্পে চাকরি করছে অর্ধ সহস্রাধিক রোহিঙ্গা
উখিয়া-টেকনাফের ২৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন পদে চাকরি করছেন ৫ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা। উখিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এনজিওদের মাসিক সমন্বয় সভায় রোহিঙ্গাদের চাকরি না দেওয়ার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হলেও এনজিওরা তা মানছে না। স্থানীয়রা অভিযোগ করছে, এনজিও কর্মকর্তারা সমন্বয় সভায় বলেন এক কথা, ক্যাম্পে করেন অন্য কাজ। এ নিয়ে স্থানীয় ও এনজিওদের মাঝে দিন দিন দূরত্ব বাড়ছে।
স্থানীয়দের দাবি রোহিঙ্গাদের স্থলে স্থানীয়রা চাকরি করলে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি তাদের আত্মসামাজিক উন্নয়নের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু রোহিঙ্গার কারণে তা হচ্ছে না। উপরন্তু বিভিন্ন কারণে অকারণে রোহিঙ্গার হাতে স্থানীয়রা লাঞ্ছিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ক্যাম্পভিত্তিক বিভিন্ন এনজিও সংস্থায় কর্মরত স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনজিও কেয়ার বাংলাদেশে ২০০ জন, টিডিএইচে ৫০, এসিএফে ৩০০, ওয়ার্ল্ড ভিশনে ৫২, ব্র্যাকে ১৬০, ওয়ার্ল্ড কনসার্ন ৫১, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনে ৬০, ডিএসকেতে ৯০, ফ্রেন্ডশিপে ৭০, এমএসএফে ১৫০, রিসডা বাংলাদেশে ৪৫ জনসহ ৩০টি এনজিওতে ৫ হাজারেরও অধিক রোহিঙ্গা বিভিন্ন পদে চাকরিরত আছেন। এছাড়া শুধুমাত্র শফিউল্লাহকাটা ১৬নং ক্যাম্পে কর্মরত আছে ১ হাজার ২০৯ জন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় চাকরিজীবীরা জানান, ৩৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করছেন এমন অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা রয়েছেন ক্যাম্পে। তারা শুধু ইংরেজিতে লিখতে পারেন। ক্যাম্পভিত্তিক হেড মাঝি, ব্লক মাঝির সূত্র ধরে এসব রোহিঙ্গারা চাকরিতে নিয়োগ থাকলেও তারা আবার ত্রাণসামগ্রী উঠানামা এবং বিতরণের দায়িত্ব পালন করেও আলাদাভাবে বেতন সংগ্রহ করে থাকেন। যা ক্যাম্প ইনচার্জের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অবগত আছেন। এ ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করলে পরবর্তী মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে মর্মে তাকে চাকরি থেকে বিদায় করে দেওয়া হয়।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিকদার জানান, রোহিঙ্গাদের চাকরি দিয়ে এনজিওরা ঠিক কাজ করেনি। যেহেতু রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে তাদের সব ধরনের দায়িত্ব গ্রহণ করা হয়েছে। সাহায্য সহযোগিতা করার পরও তাদের চাকরিতে নিয়োগ দিয়ে এনজিওরা নানাভাবে ফায়দা লুটছে বলে তিনি দাবি করেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, এনজিওদের সমন্বয় সভায় বার বার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের যাতে কোনো চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া না হয়।
প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এনজিওদের কাছে জানতে চাইলে তারা একথা অস্বীকার করে বলেন, তাদের কাছে কোনো রোহিঙ্গা চাকরিরত নেই, যা আছে তা শুধু স্থানীয় ছেলেমেয়ে। তিনি বলেন, বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে দেখার জন্য অচিরেই একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে।
Collected from protidinersangbad