জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা। একইসঙ্গে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের ৫০ শতাংশ পদে তাদের পদায়ন, প্রস্তাবিত মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ও আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালকের পদসহ সব পদে শিক্ষকদের পদায়নের দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা এসব দাবি জানান। ‘স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি’ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে ১৯৭৪ সালে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকাদের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ধরে একটি যৌক্তিক পদ-সোপানসহ স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠন করা। বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখাকে অবহিত করে বেশ কয়েকবার আবেদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আমাদের আবেদনের বিষয়টি আলোর মুখ দেখেনি। যার ফলে শিক্ষাব্যবস্থার মেরুদণ্ড মাধ্যমিক শিক্ষা তার কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বর্তমানে বিপুল সংখ্যক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বেসরকারি কলেজ, সরকারি কলেজ তদারকিসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালাতে হিমসিম খাচ্ছে। তাই মাধ্যমিক শিক্ষা প্রশাসনের কাজে গতি এবং বিদ্যালয় পরিদর্শন ও তদারকি ব্যবস্থা জোরদার এবং জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর প্রস্তাবনা অনুযায়ী মানসম্মত আধুনিক, যুগোপযোগী ও বাস্তবমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য ‘স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ একান্ত প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে ১২ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো- স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন। সহকারী শিক্ষকদের বিদ্যমান পদের আপগ্রেডেশন করে এন্ট্রিপদ নবম গ্রেডে উন্নীতকরণ। সরকারি কলেজের ন্যায় চার স্তরীয় পদ-সোপান বাস্তবায়ন। দ্রুত দীর্ঘদিনের বকেয়া টাইমস্কেল/সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ প্রদান। বিভিন্ন সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সম্মানিত সিনিয়র সহকর্মীদের ব্যাচভিত্তিক নিয়মিত পদোন্নতি নিশ্চিত করা। ২০১০ (অংশ) ও ২০১১ ব্যাচের সহকারী শিক্ষকদের সিনিয়র শিক্ষকের শূন্যপদে পদোন্নতি। সিনিয়র শিক্ষকদের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের ৫০ ভাগ পদে দ্রুত বিধি মোতাবেক পদায়ন নিশ্চিতকরণ। দ্রুত নন-ক্যাডার শিক্ষকদের স্থায়ীকরণ। অগ্রিম বর্ধিত বেতন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার দ্রুত নিরসন। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের জন্য সুষ্ঠু ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বদলি নীতিমালা বাস্তবায়ন।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারি মাধ্যমিক স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের চেয়ারম্যান ও সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা সমিতির খুলনা অঞ্চল কমিটির সভাপতি মমতাজ খাতুন নেতৃত্ব দেন। তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আয়োজক সংগঠনের মুখপাত্র ওমর ফারুক। আরও উপস্থিত ছিলে শিক্ষক নেতা মুনিরুল ইসলাম মঞ্জু, কামরুন নাহার, আকরাম হোসেন, রিজবি হোসেন খান, শাহ নেওয়াজ সেতু, সালাউদ্দিন।
Collected From Risingbd