প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বদলি বাণিজ্যের অভিযোগ
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বদলি ও গোপন পাসওয়ার্ড এবং শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নামে অর্থ লেনদেন রমরমা বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘুষে লেনদেন যেন ওপেন সিক্রেট।
বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, সমন্বিত অনলাইন শিক্ষক বদলি ২০২২ কার্যক্রম নীতিমালা লঙ্ঘন ও ব্যাপক অনিয়ম করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা, বদলি নীতিমালা ৩ এর ৬ নম্বর শর্তে দুরুত্ব, লিঙ্গ, জ্যেষ্ঠতা বিবেচনার কথা থাকলেও তা উপেক্ষা করে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে জ্যেষ্ঠদের বঞ্চিত করে কনিষ্ঠদের বদলির আদেশ জারি করা হয়। যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে।
শিক্ষকদের দাবি, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কতিপয় শিক্ষক হিসাবে পরিচিত এবং চিহ্নিত দালালদের মাধ্যমে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেন যাচাই-বাছাই না করে কনিষ্ঠ শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হালিম। লিঙ্গ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বৈষম্য সৃষ্টি করে শিক্ষকদের বদলির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন তিনি।
কি কারণে আবেদন বাতিল করা হয়েছে তা প্রকাশ না করে অনলাইন পোর্টাল থেকে সহকারী শিক্ষকদের লগইন করার আপসনটি তুলে নেওয়া হয়। যার ফলে আবেদনকারী শিক্ষকরা আবেদন বাতিলের উপযুক্ত কারণ জানতে পারা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, ব্যাপক অনিয়ম অসদুপায় অবলম্বন করে বদলি বাণিজ্য করা হয়েছে। বেসরকারি প্রাথমিকে ২০১৩ সাল থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে।
এসব বিদ্যালয়ে পূর্বে থাকা ৪ জন শিক্ষকের স্থলে আরও তিনজন বাড়িয়ে অথবা পূর্বের শিক্ষকদের মধ্য থেকে বদল করে প্রতি শিক্ষকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আইপিইএমআইএস পোর্টালে শিক্ষা অফিসের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। উপজেলা শিক্ষা অফিসে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না। ক্ষুদ্র মেরামত, স্লিপ বরাদ্দ, রুটিন মেইনটেনেন্স, পার্সোন্যাল লোনের সুপারিশসহ সবকাজেই টাকা দিতে হয়।
সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা খোরশেদ আলম চৌধুরী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনুপস্থিত থাকলে অথবা অন্য কোন অজুহাতে কারণ দর্শানো হবে বলে শিক্ষকদের কাছ থেকে ৪-৫ হাজার করে টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
কারণ দর্শানোর বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, শোকজ করলে অফিসে কাগজ থাকবে আমি কোন কাগজ পাইনি তবে এরকম কথা আমিও শুনেছি। সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা খোরশেদ আলম চৌধুরীর দাবি শোকজ করেছি কাগজ দেইনি। এখন দেব। এসব নিয়ে লেখালেখি করলে ইজ্জত হ্যাম্বার হয়। শিক্ষক বদলি, অনিয়ম, পাসওয়ার্ড প্রদানে টাকা নেওয়ার বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হালিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষক নেতাদের মধ্যে দুটি গ্রুপ রয়েছে, এরা আমার বিরুদ্ধে কথা ছড়াচ্ছে, অনলাইন বদলিতে আবেদন করতে হয় অনলাইনে, সফটওয়ারের মাধ্যমে সব কাজ করা হয়, আমার কোনো হাত নেই’।
এব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।
Collected from dainikshiksha