ভুয়া ইন্স্যুরেন্সের নামে চাকরি দিচ্ছিল ওরা
ভুয়া একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ‘জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি’র নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল ওরা। রেজিস্ট্রেশনবিহীন আর্থিক কোম্পানির আড়ালে চাকরি দেওয়ার কথা বলেই শুধু হাতিয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। তবে বেশি দূর এগোনোর আগেই এলিট ফোর্স র্যাবের কাছে ধরা খেয়েছে প্রতারক চক্রটি। সোমবার এ চক্রের পাঁচ রিং-লিডারসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪-এর একটি দল। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন এরশাদ শেখ (৩১), নাঈম শেখ (২৬), শহিদুল্লাহ (২৩), ইলিয়াস আহম্মেদ (২৫), জামাল উদ্দিন (৫২), জিয়াউর রহমান (২৫), মহসিন কবির (৪২), কামরুল শেখ (১৯), আজিজুল ইসলাম (২০), হুমায়ুন শেখ (২১), রাহাত অনিক (১৯), মাওলানা মাইনুদ্দিন (২৩), বারহাম মিয়া (২০), হিজবুল্লাহ (১৯) ও চান মিয়া (১৯)।
গতকাল র্যাব-৪ অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানাধীন শিমুলতলা সুপার মার্কেটের চতুর্থ তলায় অবস্থিত জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি সিপিইউ, একটি মনিটর, দুটি প্রিন্টার, ১৫টি রেজিস্টার, ১৪টি মোবাইল, ১৪টি সিমকার্ড, ৯টি সিল, ৩০টি ভিজিটিং কার্ড, চারটি আইডি কার্ড, ২৫০টি বায়োডাটা ফরম, একটি ক্যাশ ভাউচার ও আটটি আবেদন ফরম জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই এরা প্রতারণার কথা স্বীকার করে। এর আগে ২০১৮ সালে এদেরই গ্রেফতার করেছিল র্যাব-১১। সে সময় তারা নারায়ণগঞ্জে প্রতারণার জাল বিস্তৃত করেছিল। বেকার, অসহায় ও নিরীহ মানুষের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নগদ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল এরা।
প্রতারণার কৌশল : প্রতারক চক্রটি জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বিভিন্ন পদে ফুলটাইম ও পার্টটাইম চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছে। বিজ্ঞাপন দেখে শত শত যুবক-যুবতী ও ছাত্রছাত্রী চাকরির জন্য গেলে প্রথমে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি হিসেবে ৫২০ টাকা করে নেওয়া হতো। পরে চাকরির নিশ্চয়তা ও মোটা অঙ্কের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে আরও ১০-২০ হাজার টাকা নিয়ে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে পলিসি খুলতে বাধ্য করত তারা। ভুয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ইউনিট ম্যানেজার, ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার প্রভৃতি পদে ১৮ হাজার ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ইন্স্যুরেন্স করাতে ভুক্তভোগীদের প্রলুব্ধ করা হতো। চাকরি পাওয়ার পর মাসের পর মাস অফিসে আসা-যাওয়া করে বেতন না পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন ভুক্তভোগীরা। পরে টাকা ফেরত চাইলে তাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি, মারধর, এমনকি প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বের করে দিত প্রতারকরা।
Collected from bd-pratidin