এক দিনে ১৪টি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা, বিপাকে চাকরিপ্রার্থীরা
সরকারি-বেসরকারি ১৪টি প্রতিষ্ঠানের একই দিনে আগামী শুক্রবার চাকরির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এক দিনেই এসব পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা নয় লাখ ৬৮ হাজার ৮৯৯ জন। এদিকে একদিনে একাধিক প্রতিষ্ঠান পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করায় বিপাকে পড়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।
কারও সকালে একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষার কেন্দ্র শরীয়তপুর। আবার বিকালে অন্য প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা ঢাকায়। আবার একই সময় একাধিক পরীক্ষার সময়সূচি দেওয়া হয়েছে ভিন্ন জায়গায়। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাকরির প্রত্যাশীরা।
প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইটের তথ্য মতে শুক্রবার যেসব প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সমাজসেবা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), বেসরকারি প্রিমিয়ার ব্যাংক, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তার কার্যালয় ও বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড (বিডিসিসিএল)। এরমধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠান বাদে বাকি সব কটির পরীক্ষা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, শুক্রবার সকাল, দুপুর ও বিকালে এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা পড়েছে একই সময়ে। শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য সবচেয়ে বড় দুটি চাকরির পরীক্ষা সমাজসেবা অধিদপ্তরের ইউনিয়ন সমাজকর্মী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের পরীক্ষা পড়েছে একই সময়ে।
চাকরিপ্রার্থী রিমন আহমেদ বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টায় আমার জেলা শরীয়তপুর সমাজসেবার চাকরির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এরপরে আবার আরেকটা পরীক্ষা ঢাকায় বেলা সাড়ে ৩টায় ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। সকালে পরীক্ষা শেষ করে বিকালে কীভাবে ঢাকায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবো এ বিষয় নিয়ে টেনশনে আছি।
শিমুল, নয়ন, রাসেল, ইলিয়াসসহ একাধিক চাকরির প্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। একইদিনে একাধিক পরীক্ষার সময়সূচি দেওয়ায় একজনের দুই-তিনটি পরীক্ষা পড়েছে একইদিন।
চাকরি প্রত্যাশীদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে একই দিনে একাধিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। ছাত্র থাকাকালীন বেশি টাকা দিয়ে আবেদন করা এবং পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়া দুটোই অসহনীয়। একদিকে আবার অনেকের চাকরির বয়স শেষের দিকে। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত কখনো সুফল আনবে না। যেসব পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না তার টাকা ফেরত চান পরীক্ষার্থীরা।
শুক্রবার যেসব চাকরির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সমাজসেবা অধিদপ্তরের ইউনিয়ন সমাজকর্মী পদে। এ পদে আবেদন করেছেন ৬ লাখ ৬২ হাজার ২৭০ জন। শূন্য পদের সংখ্যা ৪৬৩টি। সে হিসেবে একটি পদের বিপরীতে এক হাজার ৪৩০ জন পরীক্ষা দেবে। সারা দেশে ৬৪ জেলায় একযোগে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা নেওয়া হবে।
২০১৮ সালে ইউনিয়ন সমাজকর্মী পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। এর আগে দুবার সমাজকর্মী পদের লিখিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেও শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত করা হয়েছিল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুই লাখ ৫৫ হাজার ২৯২ জন চাকরির পরীক্ষা দেবেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে একই দিনে ১৫ থেকে ১৬টি চাকরির পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। এ নিয়েও ব্যাপক সামালোচনার ওঠেছিল।
সে সময় প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছিল, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিধিনিষেধ থাকায় নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ ছিল। বিধি নিষেধ উঠে যাওয়ায় জমে থাকা পরীক্ষা সব প্রতিষ্ঠান নেওয়া শুরু করেছে। তাই একই সঙ্গে পরীক্ষার সূচি পড়ছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ইউনিয়ন সমাজকর্মী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল কয়েক বছর আগে। আমাদের পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অনেক আগে থেকেই। তাই পরীক্ষার নেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। আমাদের পরীক্ষা পেছানোর সুযোগ নেই।
Collected from dhakatimes24