Facebook Youtube Twitter LinkedIn
...
নতুন শিক্ষাক্রমের পুরোপুরি সুফল পেতে ১০ বছর লাগতে পারে

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রম যদি পুরোপুরি ও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে আগামী পাঁচ বছর পর থেকে একটু পরিবর্তন দেখতে শুরু করব। আর ১০ বছর পর বড় পরিবর্তন দেখতে পাব।
সোমবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষে ব্র্যাকের আয়োজনে ‘এক্সপ্লোরিং এটিচিউড টুয়ার্ডস জেন্ডার নর্মস এমং দ্যা ইয়ুথ পপুলেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে পরিবর্তন রাতারাতি হয় না, সময় লাগে। কিন্তু যদি খুব ভালোভাবে করতে পারি তাহলে আগামী বছর থেকে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে শিখতে শুরু করবে। এর মধ্য দিয়ে তাদের পরিবারে চিন্তাগুলো চলে যাবে, চর্চাগুলো চলে যাবে। তার মধ্য দিয়ে আমরা একটা বড় পরিবর্তন আশা করতে পারি।
কন্যা শিশুদের অধিকার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নারীর অবস্থা, অবস্থান, পড়াশোনা, তার অধিকার, পোশাকের স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার ও ধর্ষণ নিয়েও কথা আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সমাজ মনে করবে ধর্ষণ হলে ধর্ষিতার সম্ভ্রমহানি ঘটে, ততক্ষণ পর্যন্ত ধর্ষণ চলতে থাকবে। এটা একটা হাতিয়ার হিসেবে কেউ না কেউ ব্যবহার করবে। যুদ্ধে ব্যবহার করবে, স্বাভাবিক জায়গায় ব্যবহার করবে, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ব্যবহার করবে, পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের ক্ষেত্রে ব্যবহার করবে।
মন্ত্রী বলেন, কুকুর কামড় দিলে সম্ভ্রম যায় না, কিন্তু ধর্ষিত হলে সম্ভ্রম যায়। নিশ্চয় সম্ভ্রম নারীর কোনো বিশেষ অঙ্গে থাকে না। অতএব ধর্ষণের সঙ্গে সম্ভ্রমের কোনো সম্পর্ক থাকা উচিত নয়। যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন, আমি কখনই মনে করি না তাদের সম্ভ্রমহানি হয়েছিল। তাদের একদল পশু নির্যাতন করেছিলো। তাদের যদি কুকুরে কামড় দিতো তাহলে নিশ্চয় আমরা বলতাম না সম্ভ্রমহানি হয়েছিল। তাদের পিতা ও সমাজ তাদের পরিত্যাগ করেছিল। একজন পিতা মুজিব তাদের মেয়ের মতো করে টেনে নিয়েছিলেন, সমাজে পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছিলেন।
শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে দীপু মনি বলেন, আমরা আমাদের শরীরে অসুস্থতা দেখা দিলে দৌড়ে চিকিৎসকের কাছে যাই। কিন্তু মানসিক সমস্যা আছে, তোলপাড় চলছে। কিন্তু কেউ স্বীকারই করবেন না। যারা জানেন তারা স্বীকার করলেও রেমিডি চাইবার ব্যবস্থা করবে না। নারীরা, মাঝবয়সী মানুষেরা, সমাজের বড় একটা অংশ মানসিক বৈকল্যে ভোগেন। কিন্তু এটাকে কেউ স্বীকার করতে রাজি নন। আমার বাচ্চা পড়তে পারছে না, ডিভাইসে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু বাচ্চাটিকে একজন মানসিক চিকিৎসকের কাছে বা থেরাপিস্টের কাছে নিয়ে যাচ্ছি না কেন? তাহলে আমার মান-ইজ্জত থাকবে না? লোকে বলবে— মানসিক চিকিৎসকের কাছে গেছ কেন, থেরাপিস্টের কাছে গেছ কেন? আমার ছেলে, আমার মেয়ে কী পাগল, এরকম নানান কথা। আমরা মানসিক দোটনার মধ্যে থাকি, কিন্তু বাস্তবতাকে স্বীকার করতে চাই না।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ প্রমুখ।
Collected From dhakapost