এমপিওভুক্ত শিক্ষায় বৈষম্য দূরীকরণ ও জাতীয়করণের দাবি
এমপিওভুক্ত শিক্ষায় বৈষম্য দূরীকরণ, জাতীয়করণ ও দুর্নীতিরোধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম (বাবেশিকফো)।
রোববার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বাবেশিকফো আয়োজিত ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষায় বৈষম্য দুরীকরণ ও শিক্ষার মানোন্নয়নের একমাত্র উপায় জাতীয়করণ’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় এ দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির নেতারা।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. মাইন উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক,কর্মচারীরা পূর্ণাঙ্গ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অথচ দুই ক্ষেত্রেই একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে একই পাঠ্যক্রম ও আইনের আওতায় শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হয়।
‘সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারিদের সুযোগ-সুবিধাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অন্যতম বৈষম্যগুলো হলো- বাড়িভাড়া, উৎসবভাতা, চিকিৎসাভাতা, পদোন্নতি না থাকা, সন্তানের শিক্ষাভাতা, গৃহ ঋণ, বদলিভাতা, চাকরি শেষে পেনশনের সুবিধা।’
তিনি বলেন, অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে বেতনের ১০ শতাংশ হারে কেটে রাখলেও বৃদ্ধ বয়সে যথাসময়ে এ টাকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নেই। অনেক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারী টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যান।
‘এছাড়া অধিকাংশ শিক্ষক নিজ জেলার বাইরে চাকরি করেন। তাদের জন্য বদলির ব্যবস্থা চালু খুবই জরুরি। অধ্যক্ষ থেকে কর্মচারী পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ও পাঁচশত টাকা চিকিৎসা ভাতা ও মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসবভাতা পান। বিশ্বের কোনো দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এত বৈষম্য নেই।’
মো. মাইন উদ্দিন বলেন, এসবের পাশাপাশি ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির অনৈতিক হস্তক্ষেপ তো রয়েছেই। এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগ এনটিআরসিএ সুপারিশ করলেও, নিয়োগ দিয়ে উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এমতাবস্থায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয়করণ জরুরি।
তিনি বলেন, জাতীয়করণ করা হলে গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী লাভবান হবে। মেধাবীরা এ পেশায় আরও এগিয়ে আসবে। প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকেই এটি বাস্তবায়ন সম্ভব। বঙ্গবন্ধু এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উন্নয়নে কাজ করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম শাহনেওয়াজ বলেন, আগেও আমরা দেখেছি, শিক্ষকরা দিনের পর দিন একই দাবিতে পথে আন্দোলন করেছেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয় নি, এটাই দুঃখজনক।
তিনি বলেন, আপনারা শিক্ষকরা একটু আগে ইঙ্গিত দিলেন আপনাদের গভর্নিং বডি নিয়ে। এ গভর্নিং বডির পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন যারা, যাদের ইশারায় কমিটিগুলো হয়....। আপনাদের জন্য স্কুল-কলেজে যে অনুদান আসে তা তো মাঝখানের ইঁদুরগুলো খেয়ে ফেলছে। ইঁদুরে খেয়ে ফেলাটাও একটি পরিকল্পনার অংশ বলে আমি মনে করি।
সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সাড়ে ১২ হাজার টাকা বেতন দেয়। আর বাড়ি ভাড়া দেয় মাত্র ১ হাজার টাকা। এতে এখন মুরগির খোয়াড়ও ভাড়া পাওয়া যায় না। শিক্ষককে ভিক্ষুক মনে করা হচ্ছে কেন?
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক ড. হোসনে আরা, শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যক্ষ ড. মশিউর রহমান মৃধাসহ আরও অনেকে।
Collected from jagonews24