Facebook Youtube Twitter LinkedIn
...
ব্রিটেনে বেকারত্ব তিন বছরের সর্বোচ্চে

আগের প্রান্তিক শেষে বেকারত্বের হার ছিল ৪ দশমিক ১ শতাংশ। এদিকে ব্রিটেনের অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) জানিয়েছে, দেশটিতে কর্মী ছাঁটাই ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। খবর বিবিসি।

বেকারত্বের হার বৃদ্ধির এ খবর এমন সময়ে প্রকাশ হলো, যখন সরকার স্থানীয়ভাবে কঠোর লকডাউনের বিধিনিষেধ আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ বিধিনিষেধ জারি হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা আরো বাড়বে এবং কর্মসংস্থান আরো বেশি চাপে পড়ে যাবে।

ওএনএসের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা জোনাথন অ্যাথো বিবিসিকে বলেন, মহামারী শুরুর পর থেকে সার্বিকভাবে কর্মসংস্থান প্রায় পাঁচ লাখ কমেছে। নির্দিষ্ট বয়সভিত্তিক শ্রেণীর কর্মী, বিশেষ করে তরুণরা এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কর্মসংস্থান হারানো প্রায় তিন লাখ শ্রমশক্তির বয়স ১৬ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ করোনা মহামারীর মধ্যে ব্রিটেনে মোট যতজন চাকরি হারিয়েছেন, তার প্রায় ৬০ শতাংশই তরুণ।

তিনি আরো বলেন, নির্দিষ্ট কিছু খাতে কর্মী ছাঁটাই হয়েছে বেশি পরিমাণে। আতিথেয়তা সেবার মতো খাতগুলোয় চাকরি হারানোর ঘটনা সবচেয়ে বেশি। ট্রাভেল এজেন্সি ও কর্মসংস্থান এজেন্সিগুলোর মতো জায়গাগুলোয়ও পরিস্থিতি অনেকটা একই।

ওএনএসের তথ্য অনুসারে, জুন-আগস্ট প্রান্তিকে যুক্তরাজ্যে মোট বেকারের সংখ্যা ছিল আনুমানিক ১৫ লাখ। এ সময়ে চাকরি হারিয়েছেন ২ লাখ ২৭ হাজার কর্মী। সেপ্টেম্বরে বেকার ভাতার জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৭ লাখ। গত মার্চে করোনার মূল প্রবাহ শুরুর পর থেকে এ সংখ্যা বেড়েছে ১৫ লাখ।

আগামী নভেম্বরে যুক্তরাজ্যে শ্রমিকদের মজুরি সমর্থন প্যাকেজ ফোরলগ স্কিমের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এরপর বেকারত্ব আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। সিটি ব্যাংকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২১ সালের প্রথমার্ধে বেকারত্বের হার ৮ দশমিক ৫ শতাংশ স্পর্শ করতে পারে, যা সর্বশেষ ১৯৯০ দশকের শুরুর দিকে দেখা গিয়েছিল।

সর্বশেষ বেকারত্বের পরিসংখ্যান নিয়ে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, আমি শুরু থেকেই সত্য বলে আসছি যে দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা প্রতিটা চাকরি বাঁচাতে সক্ষম হব না। তবে এগুলো কেবল পরিসংখ্যান নয়, এগুলো মানুষের জীবন। এ কারণে যতটা সম্ভব চাকরি রক্ষার চেষ্টা করা এবং যারা চাকরি হারাচ্ছেন, তাদের চাকরি ফিরে পেতে সহায়তা করা আমার অন্যতম অগ্রাধিকারমূলক বিষয়।

বেকারের সংখ্যা ১৫ লাখের বেশি, বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশ—এ দুই পরিসংখ্যান অবশ্যই বেশ উদ্বেগজনক। তবে ব্রিটেনের বেকারত্বের এ হার এখনো আন্তর্জাতিক ও ঐতিহাসিক মানের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কমই রয়েছে।

লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিলের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনরায় শুরুর সুযোগ করে দেয়া ও সরকারের অন্য কিছু উদ্যোগের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছিল যুক্তরাজ্যের শ্রমবাজারে। তবে করোনা সংক্রমণ নতুন করে বাড়তে থাকায় এবং সরকার পুনরায় লকডাউনের পরিকল্পনা করায় বিশ্লেষকরা কর্মসংস্থান পরিস্থিতি নিয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। অর্থনীতি পুনরায় স্থবির হয়ে পড়লে বেকারত্ব আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

Collection From Bonikbarta