দেশে প্রায় দুই মিলিয়ন বা ২০ লাখ তরুণ প্রতি বছর শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবের কারণে প্রধানত তারা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে স্থায়ীভাবে কাজ করতে বাধ্য হয়। অপ্রাতিষ্ঠানিকের তুলনায় প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক কম। প্রায় ৮০ শতাংশ চাকরির সুযোগ তৈরি হয় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। এই প্রেক্ষাপটে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শ্রমিকের দক্ষতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেস বা এমএসএমই খাতে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সেবার মান বৃদ্ধি এবং এই সংক্রান্ত ব্যবসা উন্নয়নে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
আজ বৃধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘করপোরেট সংযোগ ইভেন্ট’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশস্থ সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের আর্থিক সহযোগিতায় ‘কর্পোরেট কানেকশন ইভেন্ট ফর এমএসএমই বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সাপোর্ট সার্ভিস’ এর অংশ হিসেবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বি-স্কিলফুল, সুইসকন্ট্রাক্ট ও দেশের বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনারস যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য দেশে চামড়াজাত পণ্য এবং আসবাবপত্র তৈরির অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে নেতৃত্বদানকারী ফার্ম এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। এর পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ভবিষ্যতে করণীয়সমূহ তুলে ধরতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বি-স্কিলফুল টিম লিড ডায়ানা সোরেন্সেন ও সুইচ কন্ট্রাক্ট সিনিয়ার ম্যানেজার মো. মকবুল হোসেন প্রমুখ।
ডায়ানা সোরেন্সেন বলেন, একজন নারী বা পুরুষের উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জরুরি, কোনক্ষেত্রে সঠিকভাবে বিনিয়োগ করলে সফল হওয়া যাবে তা জানা।
আলোচনায় বক্তারা এমএসএমই সংক্রান্ত বিনিয়োগে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কয়েক দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হচ্ছে, নারীদেরব্যবসা সম্প্রসারণে প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সহজ ঋণপ্রাপ্তি, এমএসএমই খাতে বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ানো, ট্রেডলাইসেন্স সহজতর করা, উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, বৃহৎ শিল্পের সহায়ক হিসেবে এমএসএমই খাতের যোগসূত্র স্থাপন, বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি।
প্রসঙ্গত, বিল্ডিং স্কিলস ফর আনএমপ্লয়েড অ্যান্ড আন্ডার এমপ্লয়েড লেবার বা বি স্কিলফুল এমন একটি কর্মসূচি, যেটি বেকার এবং অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের জন্য দক্ষতা তৈরিতে কাজ করে। একই সঙ্গে তাদের মৌলিক অধিকার রক্ষার পাশাপাশি শ্রমবাজারে তাদের প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি এবং আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত পুরুষ ও নারীদের উন্নয়নে কাজ করে।
বেকার তরুণদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই কর্মসূচি দেশের বিজনেস ডেভলপমেন্ট সাপোর্ট সার্ভিস (বিডিএস) এর সহযোগিতায় বাংলাদেশের ছয়টি অঞ্চলে কাজ করছে। এই ছয়টি জেলাসমূহ হচ্ছে- ঢাকা, গাজীপুর, বগুড়া, নীলফামারী, রংপুর এবং কিশোরগঞ্জ। এতে বেকার তরুণদের সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই পরিবেশ উন্নয়নের বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। বিডিএসএর সহযোগিতায় লাইটক্যাসল পার্টনারস তরুণদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, বাজারে প্রবেশগম্যতা ও ব্যবসা-মডেল সংক্রান্ত বিষয়ে এই পর্যন্ত ১০৩টি এমএসএমইকে সহায়তা দিয়েছে।
Collected from
bhorerkagoj