এ তাঁতপল্লির প্রথম পর্যায়ে মাটি ভরাট ও সীমানা প্রাচীরের কাজ শেষ হচ্ছে ৩০ জুনের মধ্যে। এ শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠিত হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হবে ১০ লাখ মানুষের। এ খবরে উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী।
তাঁতপল্লি প্রকল্প সূত্র জানায়, জেলার জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের নাওডোবা মৌজায় ৫৯ দশমিক ৭৩ একর ও মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কুতুবপুর মৌজায় ৬০ একর করে মোট ১১৯ দশমিক ৭৩ একর জমিতে এ পল্লি গড়ে উঠছে। জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকার বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়ন ও অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এ প্রকল্প ঘিরে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। প্রকল্পের আওতায় তাঁতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কলকারখানার পাশাপাশি কর্মরত তাঁতিদের জন্য থাকছে আবাসন ব্যবস্থাও। তাঁতিদের কর্মসংস্থান, দক্ষতা বৃদ্ধি, পণ্যের গুণগতমান উন্নয়ন, বাজারজাতকরণ, পণ্যেরন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে তাঁতবস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়ন ঘটবে। প্রকল্পের আওতায় ৮ হাজার ৬৪টি তাঁত শেড নির্মাণ হবে। যেখানে ৮ হাজার ৬৪ তাঁতিকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হবে। বার্ষিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪ দশমিক ৩১ কোটি মিটার কাপড়। সরেজমিন ঘুরে দেখা হয় তাঁতশিল্প নির্মাণ কাজ। এ নিয়ে কথা হয় স্থানীয়দের সঙ্গে। নাওডোবা ইউনিয়নের বাসিন্দা দুদু মিয়া বলেন, শেখ হাসিনা তাঁত শিল্পের পাশেই আমাদের বাড়ি। তাঁতপল্লি চালু হলে এখানে আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। আমরা কাজ করে উপার্জন করতে পারব।
ব্যবসায়ী চুন্নু আকন, কামাল ভুইয়া বলেন, পদ্মাপার প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় আগে উন্নয়নের তেমন কোনো ছোঁয়া লাগেনি। পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হওয়ার পরই পাল্টে যেতে থাকে এলাকার উন্নয়নের চিত্র। এখানে নির্মাণ হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় তাঁতপল্লি। এখনই পদ্মা সেতু দেখতে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ভিড় করছেন আমাদের এলাকায়। তাঁতপল্লি নির্মাণ শেষ হলে সব সময় আমাদের এ এলাকাটি জমজমাট থাকবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এখানকার হাজার হাজার মানুষের।
শেখ হাসিনা তাঁতপল্লির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খোকন কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার চানমিয়া সরদার বাপ্পি বলেন, এ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের মাটি ভরাট ও সীমানা প্রাচীরের কাজ ৩০ জুন শেষ হবে। আমরা গুণগতমান ঠিক রেখেই কাজ শেষ করতে পারব। পরে জুলাই মাসে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হবে। নাওডোবা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ আলমগীর হোসেন ঢালি বলেন, নাওডোবা এলাকায় সরকার তাঁতপল্লি নির্মাণ করায় আমরা এলাকাবাসী অনেক খুশি। এ শিল্প চালু হলে এলাকায় বেকার লোকের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আর্থসামাজিক ব্যাপক উন্নতি হবে।
এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান বলেন, শেখ হাসিনা তাঁতপল্লি দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে টিকিয়ে রাখার প্রয়াস। এর ফলে উন্নত হবে দেশের তাঁত শিল্প। স্থানীয়দের পাশাপাশি জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে তাঁতিদের। শেখ হাসিনা তাঁতপল্লি নির্মাণ কাজ শেষ হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিপুল সংখ্যক জনগণের কর্মসংস্থান হবে। দেশের তাঁত বস্ত্রের উৎপাদনও বাড়বে কয়েকগুণ।
COLLECTED FROM JUGANTOR