ঢাবির আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অনুষদের ক্যারিয়ার অ্যান্ড রিসার্চ ফেয়ার
ক্যারিয়ার অ্যান্ড রিসার্চ ফেয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অনুষদের একটি আয়োজন। ১৭ মে ক্যাম্পাসের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে বসেছিল এ আসর। বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো), বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাপেক্স, আরলা ফুডসসহ সরকারি-বেসরকারি মোট ৩৫টি নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের স্টল ছিল এই অনুষ্ঠানে। পূর্ণকালীন, খণ্ডকালীন চাকরির পাশাপাশি শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজের সুযোগও মিলেছে এই ক্যারিয়ার ফেয়ারে। সরাসরি চাকরির আবেদন করতে পেরেছেন শিক্ষার্থীরা।
‘অনার্স করার পর আমরা অনেকে বুঝতে পারি না কী করব; কোথায় আবেদন করব। চাকরিক্ষেত্রের অনেক কিছুই অজানা থাকে। এ ধরনের ফেস্ট এই সব প্রতিবন্ধকতা দূর করবে বলেই আমার বিশ্বাস। এ ছাড়া আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অনুষদ থেকে যাঁরা বের হচ্ছি, তাঁদের সাধারণ চাকরির বাইরেও অনেক বিশেষায়িত চাকরির সুযোগ থাকে। সেগুলো সম্পর্কেও সরাসরি জানার সুযোগ হয়েছে এই উৎসবে,’ বলেন ভূতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মুবতাসিম ইশরাক।
উৎসবে অংশ নেওয়া একটি প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস (সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস)। প্রতিষ্ঠানটির ওয়াটার রিসোর্স অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ বিভাগের গবেষণা পরামর্শক সুমাইয়া জাহানের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আয়োজনে অংশ নিয়ে তাঁর প্রতিষ্ঠান কীভাবে লাভবান হলো। তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু ছাত্রছাত্রীর কাছ থেকে সিভি নিয়েছি আমরা। আমাদের সামনে যখন কোনো প্রজেক্ট আসবে, তখন সহজেই তাঁদের যুক্ত করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরাও আমাদের সম্পর্কে জানলেন, আমাদের কাজের ব্যাপারে ধারণা পেলেন। তাঁরা যদি ভবিষ্যতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে চান, তাহলে তাঁদের জন্যও সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে।’
সকালে টিএসসি মিলনায়তনে আয়োজনের বক্তৃতা পর্বের সূচনা করেন আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অনুষদের ডিন জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, সহ–উপাচার্য (একাডেমিক), সহ-উপাচার্য (প্রশাসন)। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। বক্তৃতা পর্ব শেষে স্টলগুলো উন্মুক্ত করা হয়। উল্লেখ্য, এই ফেস্টকে কেন্দ্র করেই অনুষদভুক্ত পাঁচটি বিভাগেই আলাদা করে পাঁচটি ক্যারিয়ার ক্লাব গঠন করা হয়েছে। যেন শিক্ষার্থীরা ক্যারিয়ারবিষয়ক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়মিতই পেতে পারেন।
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রভাষক নাজমুন নাহার বলেন, ‘একাডেমিক আর পেশার মধ্যে সমন্বয় সাধনের প্রয়োজনীয়তা থেকেই মূলত এই ইভেন্টের আয়োজন। ক্যারিয়ার ফেস্ট বলতে আমরা সচরাচর শুধু নিয়োগের আয়োজন বুঝলেও এই ইভেন্টে বিভাগগুলোর গবেষণা এবং এর সঙ্গে চাকরির বাজারের যোগসূত্র তুলে ধরাও ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য। এ ছাড়া, এই আয়োজনের ফলে বিভাগগুলোর শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে যে আন্তরিক যোগাযোগ তৈরি হয়েছে, ভবিষ্যতে তা বিভিন্ন গবেষণামূলক কাজে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।’
নানা আয়োজনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল পোস্টার উপস্থাপন। আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো থেকে প্রতিযোগীরা গবেষণাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পোস্টার প্রদর্শন করেন। প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। এ ছাড়া ভিডিও, যন্ত্রপাতি, গবেষণামূলক বই ইত্যাদি প্রদর্শনের মাধ্যমে বিভাগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিজেদের শিক্ষা কার্যক্রম সবার সামনে তুলে ধরেন।
আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অনুষদের ডিন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘এ বছর কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা ক্যারিয়ার এবং রিসার্চ ফেস্ট একসঙ্গে আয়োজন করেছি। তবে আগামী বছর থেকে আলাদা আলাদাভাবে আয়োজন করব। এ ছাড়া ক্যারিয়ার ফেস্টটিও নিজ নিজ বিভাগে আলাদাভাবে আয়োজনের পরিকল্পনা আছে।’