Facebook Youtube Twitter LinkedIn
...
দক্ষ-ডিজিটাল কর্মশক্তি রূপান্তরে ভূমিকা রাখছে কোডার্সট্রাস্ট

তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ ও ডিজিটাল কর্মশক্তিতে রূপান্তর করতে কোডার্সট্রাস্ট অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে, তাদেরকে পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে খাপ খাইয়ে নেওয়ার যোগ্য করে তুলতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামে কোডার্সট্রাস্টের ক্যাম্পাস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। নগরীর আগ্রাবাদ হোটেলে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আগ্রাবাদের ক্লিফটন প্লাজায় চালু করা হয় কোডার্সট্রাস্টের চট্টগ্রাম ক্যাম্পাস।
ডা. দীপু মনি বলেন, কোডার্সট্রাস্ট এখন চট্টগ্রামে তাদের প্রতিষ্ঠান নিয়ে এসেছে। চট্টগ্রামের মানুষের জন্য এটা আনন্দের বিষয়।
তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় জরুরি একটি বিষয় এই তথ্য প্রযুক্তির দক্ষতা। কোডার্সট্রাস্ট সেই সুযোগই এখানে সৃষ্টি করছে। এখানে কেউ টেকনোলজি নিয়ে কাজ করবে, কেউ রোবটিক্স আবার কেউ সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কাজ করবে।
তিনি বলেন, বলতে গেলে চতুর্থ শিল্প বিল্পবের যেসব কাজ আছে প্রায় সব কাজে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে কোর্ডার্সট্রাস চেষ্টা করছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার দরজা প্রায় খুলে যাচ্ছে। যার ফলাফল সুদূরপ্রসারী।
কোডার্সট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও পুরস্কারজয়ী আইটি উদ্যোক্তা আজিজ আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান এনডিসি ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। 
উদ্বোধনী কর্মসূচিতে ইউনিভার্সিটি ফর পিস, সিম্পলিলার্ন, ডিসকভারি এডুকেশন, থিম্বলর মতো কোডার্সট্রাস্টের আন্তর্জাতিক পার্টনারদের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের অভাবনীয় অগ্রযাত্রা হুট করে আসেনি। দেশ আজ ডিজিটাল। আজ সবার হাতে হাতে মোবাইল। আমাদের জীবনের একটি বড় অংশ ডিজিটাল প্রযুক্তি দখল করে আছে। এ অবস্থায় সবাইকে প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে দক্ষ হতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আজিজ আহমদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেওয়ার পরেও অনেকের চাকরি পেতে ৩ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত লেগে যায়। কোডার্সট্রাস্টের মাধ্যমে এই শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল স্কিলস দিয়েই আমরা তাদের দ্রুত কর্মবাজারে নিয়ে যেতে পারছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং বর্তমানে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার যাত্রায় এই ডিজিটাল দক্ষতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন,  কোডার্সট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা সেই প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে কোডার্সট্রাস্টের আন্তর্জাতিক পার্টনার প্রতিষ্ঠান থিম্বলের সিইও অস্কার পেড্রোসো বক্তব্য রাখেন। যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে লেখাপড়া করার সময়ে রোবটিকস শেখার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেন, কোডার্সট্রাস্টের সঙ্গে কাজ করে বাংলাদেশেও আমরা স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের রোবোটিক্স ও বিজ্ঞান ও দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতে চাই।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, কোডার্সট্রাস্ট তরুণ প্রজন্মকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রতিষ্ঠানটির চট্টগ্রামে একটি ক্যাম্পাস হচ্ছে এটা বেশ আনন্দের সংবাদ।
ওয়াসিকা আরও বলেন, গত ১৪ বছরে দেশ অনেক এগিয়েছে। দারিদ্র কমেছে, শিক্ষার হার বেড়েছে। ২০১০ সালে কারিগরি শিক্ষার হার ছিল ১ শতাংশ। যা এখন ১৭ শতাংশ।
তিনি বলেন, এই ১৭ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশে পৌঁছাতে কোডার্সট্রাস্ট সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারবে। বাংলাদেশের যে উন্নয়নের অভিযাত্রা সে জায়গায় আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করা দরকার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরিন আখতার বলেন , আমাদের শিক্ষার্থীদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রয়োজন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।
স্কিল না থাকায় অনেকেই আশানুরূপ চাকরি পায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা চাইবো আমাদের ছেলেমেয়েরা আইটি সেক্টরে নিজেদের স্কিল বাড়িয়ে এগিয়ে যাক। 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোডার্সট্রাস্টের মাধ্যমে তাদের স্কিল ডেভলপমেন্ট নিশ্চিত করতে পারবে, এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন উপাচার্য ড. শিরীন আখতার।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, তথ্য ও প্রযুক্তি নিয়ে আমাদের যে ভাবনা তার আমূল এবং বিপ্লবী পরিবর্তন দরকার। দেশকে ডিজিটালাইজডভাবে সমতায় আনতে গেলে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে উন্নত করে কাজে লাগাতে হবে। বিজ্ঞানমনস্ক ও ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোডার্স ট্রাস্টের এফিলিয়েশনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কোডার্সট্রাস্টের সঙ্গে আমরা কাজ করতে চাই। আমাদের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তির ফলে এখন থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ নিয়ে কাজ করতে পারবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান বলেন, আমরা জ্ঞান, বিজ্ঞান চর্চার একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই। কোভিড আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছে সময়ের প্রয়োজনে কীভাবে পরিবর্তন হতে হয়ে। স্কিল বাড়াতে হবে। স্কিল ছাড়া কিছুই করা যায় না।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন- ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও ডিজিটাল দেশে পরিণত করবেন। সেই উদ্দেশ্যে নিয়ে আমরা সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করছি। সেই লক্ষ্যে দেশের প্রথম স্মার্ট জেলা হিসেবে চট্টগ্রামকে তৈরি করা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, কোডার্স ট্রাস্টের চট্টগ্রাম ক্যাম্পাসে শুরু হওয়া একাউন্টিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের অফলাইন কোর্সে ওপেনিং ব্যাচে প্রথম ১০০ জন রেজিস্ট্রেশনকারী পাচ্ছেন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত স্কলারশিপ। এর মধ্যে ১০ জন পাবেন ফুল-ফ্রি স্কলারশিপ। এছাড়া অন্যান্য কোর্সের মধ্যে থাকছে গ্রাফিক্স ডিজাইন, প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইন, একাউন্টস ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম, অ্যাডভান্সড এক্সেল, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, কন্টেন্ট রাইটিং, পাইথন, ওয়েব ডিজাইন, এডভান্সড ওয়েব ডেভলাভমেন্ট ও অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভলপমেন্ট।
Collected from dhakapost